দিশারী মুখোপাধ্যায়-এর কবিতা
রৌরব গুলজার
একটা নির্দিষ্ট মহলে পৌঁছাতে চেয়েছিলাম
তাজ থাক আর না থাক , কিন্তু এখন
সমস্ত রাস্তা গুয়ে মুতে বমিতে ভর্তি
পা ফেলার জায়গা নেই কোথাও
কোথা থেকে এসেছিলাম আমি
ভুলে গেছি
খুঁজবার জন্য পিছনে পা বাড়াতেই দেখি আগুন
আত্মহত্যার জন্য যেসব উপায় মানুষ জানে
মহড়া দেব ?
কাকে হত্যা করব ? কেউই যে নেই
শুদ্ধতম নিষিদ্ধ
সাদা পায়রাটা কিছুটা দূরে ছিল
( যতটা দূরে থাকলে দৃষ্টি বয়সকে বলে
কচিখোকা সেজে থাকা আর চলে না ) তাই
ওকে মনে হয়েছিল কাঞ্চনফুল
যেরকম হয় ওদের, মাঝেমাঝে , আকাশ পেল
উড়ে যাবার সময় একটা আধখানা বৃত্তের রাস্তা তৈরি হয়
আমি সেই রাস্তাতে পেন্সিল বুলাতে চাই , অথচ
ঠিক সেইসময়ই হাতের আঙুলে একটা নখ
খচখচ করতে থাকে, তাকে কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি
জলের দাগ বেশিক্ষণ থাকে না
খুব কাছে একটা জায়গায় ,এতো কাছে , যেখানে
সশরীরে আমি ঢুকতে পারি না
অনেক রঙিন শাড়ি হাওয়ায় উড়তে দেখি
প্রতারক শাড়িদের ভাষা সেইসব কুয়োর মতো
যেখানে পতন আছে কিন্তু জল নেই
কীকরে আমি যেতে পারি সেই শুদ্ধতম নিষিদ্ধের কাছে
কাঞ্চনফুল কি আর ফুটবে কখনো
লোহার ভীম
লোহার ভীম তৈরি হয়েছিল
অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের আলিঙ্গন সামলানোর জন্য
সেই ভীমের দেহে মরচে ধরেছে দেখে
সারা হস্তিনাপুরে ঢিঢি পড়ে গেছে
পাণ্ডবপক্ষ , কৌরবপক্ষ
সসাগরা পৃথিবীর সকলেই জানে
মরচে পড়ার দায় লোহার একার নয়
পর্দার আড়ালে আছে জল আর হাওয়া
মাটির পুতুল , কাচের পুতুল
এমনকি প্লাস্টিকের পুতুলরাও
নিজেদের বাইসেপ্স ট্রাইসেপ্স নিয়ে মুখর
মরচের ভেতর থেকে বেরিয়ে এলে প্রকৃত ভীম
যুদ্ধ শুরু হবে
শুতে পারিনা
চিৎ হয়ে শুতে পারিনা
পাছে নগ্ন শক্তিকে দেখে ফেলি বুকের উপর
যদি বুকের পাঁজর ভেঙে যায় তার পায়ের চাপে
উপুড় হয়ে শুতে পারিনা
আদিম প্রবৃত্তি জেগে ওঠে
বাঁদিকে পাশ ফিরলে টের পাই
কী বিশাল পাপের পাহাড়
ডান হাত কেটে নিয়েছে রাষ্ট্র
সেদিকে শ্মশান-গন্ধ শুধু
কোনোভাবেই শুতে পারিনা
ঘুমাতে পারিনা
যদি একটু দাঁড়াতে সাহায্য করে কেউ
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই দেখে নেব স্বপ্নের আদল
পাহাড়ের কথা
পাহাড় দেখে অবাক হচ্ছিল সবাই
কত বড় , কত উঁচু
বিস্ময়ের কী গাঢ় অলংকরণ !
মাথা তুলে , ঘাড় উঁচু করে দেখতে হয়
কেউ কেউ অনুপাতের অংক কষছিল
অংকের উত্তর না মিললে যা হয়
ক্যামেরা-গ্রাহ্যতা চলে যায় তাদের
আমি কেবল ভাবছিলাম ওর ভেঙে পড়ার কথা
ভাঙবে তো একদিন
কী বিপর্যয়ই না হবে সেদিন
শুদ্ধতম অস্তিত্বের খোঁজে অবিরাম পথ চলায় সচল জোৎস্না কিছু শুখনো বনফুল উত্তরাধিকারের একমুঠো ডালমুট এবং দিশারীর এই সকল কবিতা একমাত্র পাথেয় হতে পারে।
উত্তরমুছুনসব কবিতাই তীক্ষ্ম
উত্তরমুছুনবিশেষ করে- লোহার ভীম চরম লাগলো