রত্নদীপা দে ঘোষ-এর কবিতা

রত্নদীপা দে ঘোষ-এর কবিতা

বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি 

গৃহস্থ যখন সন্ন্যাসের পথে পা বাড়ায়, মেঘ ডাকে বাজ পড়ে বৃষ্টি ঘন হয় অতল একতারায়।
সৃষ্টির কাপাস উপচানো শালিখদল, গান সাধে সাধক রাখাল
বাহির ঘর উজ্জ্বল বিশদ, শুরু হয় ভুবন ভিত্তিক অন্তরের উৎসব
গৃহস্থ সন্ন্যাস নিলে, দৃশ্য জুড়ে ভিয়েন বসে। সুজাতার রন্ধনশালায় ঝিকমিক করে তারার পায়েস

প্রয়াগফুলের শোভায় নামবেদ! সকল বিষণ্ণতা দূর কোরে মন্দিরালোকে সঞ্চারিত ক্ষমার  দ্যুতি!
ঋষিযাত্রার পরে নক্ষত্রের কলসখানি তাঁর, প্রাণায়াম পূর্ণ রশ্মিসূর্য।  উপাসনাতীরে সাষ্টাঙ্গ হয়ে আছে প্রাণসঙ্গীত 
রাজপুরুষ তিনি, তবু ফকিরের একালোকে আছেন মুগ্ধ !

সাধনার দেবগাত্রই তাঁর অতীন্দ্রিয় চন্দ্রবলাকা। বরাভয় আঁকা হল ঈশ্বরের আদলে।
ইমন শিহরণ ধন্য ডানাজগত। বাতাসের আভরণ পাঠ করে তিনি শেখালেন হরিৎ মণ্ডপ।
বীজমন্ত্রে গাঁথা নিরাকার পিটক, তাঁরই হাতে গড়া তপোযজ্ঞ নিভিয়ে দিতেছে সমস্ত অসুখ

তোমার হাসির ঘ্রাণ পেয়ে খিলখিলিয়ে উঠলো চরাচর
আশ্লেষা নদীর সঙ্গে কথাবার্তা শুরু হল কৃতি বনভূমির
স্পষ্ট আহ্নিক, পৃথিবীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হল কৃত্তিকা নক্ষত্র। রেবতী সাগরে ডাকলো বাণ অনির্বাণ ধ্রুবজ্যোতি 
তুমি হাসলে আর এতোকিছু  হল। তোমার স্পর্শে না জানি আরও কতো তীর্থধ্বনি বেজে উঠবে, এই পরবাসে

আরেকটু এগোলেই মহাবৃক্ষের দ্যাখা পাওয়া যাবে, এই আশায়  রাজপ্রাসাদ ছেড়েছিলেন তিনি।  কারা যেন হাত ধরে টানাটানি, চোখের জল!
ঘর নেই, বুকের শতদলে ফুটেছে অজস্র তথাগত। নম্র কমণ্ডলু টেনে নিয়ে যায় জপগ্রন্থের দিকে
বোধিগাছের শাখায় শাখায় ভোর, মহাপৃথিবীতে খুব ভোর এলো আচমকা।
গেরুয়া ধুলোর আলো, সন্ন্যাস পূর্ণ হল।


৩টি মন্তব্য:

  1. রত্নদীপার কবিতার অন্যরকম কাজ । ভালোলাগলো ।

    উত্তরমুছুন
  2. সমস্ত আগল ভেঙে দিয়ে টেনে নিয়ে যায় সমুদ্দুরের দিকে , দিনরাত্রির ঘাটে ঘাটে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ আলোর ঝলকানি ।

    উত্তরমুছুন