শুভদীপ আইচ-এর কবিতা

শুভদীপ আইচ-এর কবিতা


ঝোঁক 
 

সময়কে করেছ বিষ
                 পাত্রকে পেয়ালা
 
শিশি থেকে শিশি
ঘুমিয়ে পড়েছে সন্দেহ
 
অথচ তোমাকে বলা হল না এখনো
প্রণয়কালীন বিকেল
কুসুমের মতো ফাটে
 
" হৃদি ফাটে কিসে ? "
 
- এ উত্তাপ ছড়িয়ে পড়তে দেখছি
পাড়ায় পাড়ায়
 
লুন্যাটিক গ্রহের কাছে বিয়োগ শিখেছি
আর ধর্মাবতার উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে ফানুস
হাওয়া ভরে দিলে কৃত্রিম সকাল
উন্মাদদের চিৎকারে গরম হচ্ছে বাজার
প্রভূত সম্ভাবনা নিয়ে দর কষাকষি করে গেছি
রক্তে রক্তে ছড়িয়ে এথিক্স
লবন হ্রদের থেকে ঝিমিয়ে নামছে সন্ধ্যে
 
সময়কে করেছ বিষ
                   পাত্রকে পেয়ালা
 
 
 

আলস্য ও উপাখ্যান
 

এসব চ্যাংড়ামো ভেঙে ফেলতে চাইছি
অথচ একটা খরগোশ ঘুমিয়ে পড়ছে রোজ
জঙ্গলে জঙ্গলে
পথে পথে
বাঁকে বাঁকে
উদ্বাস্তু এক ঘুম বিরক্তি ঝোলাচ্ছে ক্যালেন্ডারে
গোল দাগ বাড়িয়ে চলেছে আফসোস
এই যে জিরিয়ে নেওয়ার আখ্যান
আর মাঝে মাঝে জ্বলে ওঠা
এসব স্থানুবৎ ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়ার মাঝে
ক্রমশঃ বিল গেটস ঢুকে পড়ছে
একটা মাসুদুর ছটফট করছে পা কাটা অবস্থায়
অথচ সুইমিং পুলের জল ইংলিশ চ্যানেলের মতো গভীর নয়
অন্তরাত্মা যেভাবে কালো
ঘিলুর চারপাশে ঠিক ততটা বদ্ধ জলাশয়
খাবি খাওয়ার ভান
আদতে একটি হাঙ্গরের পূর্বাভাস
যুদ্ধের আগের নীরবতা
আড়মোড়া ভেঙে দৌড়ে পালাচ্ছে
 
 

নিখোঁজের খোঁজে 
 
 
মাঝে মাঝে ভালোই আলো তুলি
 
অন্ধকার কুপিয়ে ঝুপ করে
আরোগ্য ফিরে আসে
 
ওষুধের শিশি থেকে
ঝুরো ঝুরো পুকুর নেমে
একলা করে শরীর
 
এদিকে তিলতিল করে চাঁদ বাড়ছে রোজ
জ্যোৎস্না লুটিয়ে ধূলার সাথে ঘর
ঘরের সাথে ঠিকানার মাখন লেপ্টে যাচ্ছে প্রচন্ড
পরিচয় হারাতে দেখি প্রাচীন ব্যাধির মতো
একটা প্রকান্ড ইদারা
 
যেখানে ঘটি ডুবে গেলে
ডাকনাম স্রেফ হারানো প্রলাপ

৪১টি মন্তব্য:

  1. ‘আলস্য ও উপাখ্যান’ এখানে বাকিদের ছাড়িয়ে গ্যাছে। ওটার জন্য ভালোবাসা। এত সহজ করে বলতে পারো, এটা একটা সুন্দর দিক।❤

    উত্তরমুছুন
  2. ভালো লেখা শুভদীপ...কলম ও তুমি স্মার্ট হয়ে গেছো

    উত্তরমুছুন
  3. পড়েছি আগেই। তিনটি লেখাই চমৎকার ❤️

    উত্তরমুছুন
  4. দ্বিতীয় কবিতাটা ফাটাফাটি। তৃতীয়টাও ভালো। লেখা দিন দিন ভালো হচ্ছে, এগিয়ে যাও বন্ধু।

    উত্তরমুছুন
  5. একটা 'নিখোঁজের খোঁজে'র জন্য সহস্র বছর আয়ুত্যাগ করা যায়...ছেড়ে দেওয়া যায় সব মোহ, মন্থন ও মেদুরতা! এ এমন এক লেখা যা নিছক স্নান নয়, অবগাহনের তৃপ্তি দেয়। বাকী দুটি লেখা নিয়ে কি কিছুই বলার থাকেনা? থাকে। মুগ্ধতা ও জনমনোরঞ্জন দুটি সমান্তরাল ধারা। কবিতার কোন দায় থাকেনা এই দুটি শীর্ষ ছোঁওয়ার। তবু একেকটি লেখার কাছে কিভাবে যেন আজন্ম ঋণপত্র লেখা হয়ে যায়, ইচ্ছেহয় অপরিশোধ্য থাকুক আজীবন...

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. এই প্রতিক্রিয়া অনেক সাহস দিলো । বড় প্রাপ্তিও । কে মন্তব্য করেছেন যদি বলেন নামটা 😊

      মুছুন
  6. রাজেশ গাঙ্গুলি দা অনেক ধন্যবাদ এভাবে সাহস দেয়ার জন্য । তোমার মন্তব্য মাথায় থাকবে ।

    উত্তরমুছুন
  7. বেশ অন্যরকম। অনবদ্য। বিকেলটা সুন্দর হয়ে উঠল😀

    উত্তরমুছুন
  8. ভীষণ সুন্দর তিনটি কবিতাই। ভালো লাগলো।

    উত্তরমুছুন
  9. আমি বরাবরই Late comer তা তো তুমি জানও... অনেক মুগ্ধতা আর এক ঘোর আচ্ছন্ন করে রাখলো তোমার কবিতা... ভালোবাসা নিও...

    উত্তরমুছুন
  10. এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।

    উত্তরমুছুন
  11. দাদা তোমার লেখা যত পড়ছি তত যেনো মনে হচ্ছে তোমার হাতে এলে বুঝি কলমেরই শিরদাঁড়া সোজা হয়ে যায়।

    উত্তরমুছুন
  12. হাঙরের পূর্বাভাস থেকে তিমি মাছের লেজের ঝাপ্টা ।মাঝের প্রস্তুতির সময়টুকুই দম ধরে থাকার ।ডুবে থাকার ।তিমি শিকারি বুঝতে পারছে তিমি মাছ নয়,জানোয়ার।
    অনেক শুভেচ্ছা। আরো লেখা চাই।

    উত্তরমুছুন
  13. ভাল লাগলো। বিশেষ করে "নিঁখোজের খোঁজে"।

    উত্তরমুছুন