উজ্জ্বল ঘোষ-এর কবিতা

উজ্জ্বল ঘোষ-এর কবিতা


পাঁউরুটি 
 
তুমি যদি আকাশের নীচে শুয়ে থাকা কাউকে
দশ টাকা দিয়ে বল, "কিছু খাবেন।"
সে পাঁউরুটি কিনে ছিঁড়ে খুঁড়ে খাবে।
 
পরের দিন যদি তাকে জিগ্যেস কর খেয়েছিল কি না,
সে বলবে হ্যাঁ, পৃথিবী কিনে খেয়েছিল!
 
তুমি অবাক হবে, ভাববে পাগল। তখন
সবুজ ফসলের ঠান্ডা হাওয়া এসে লাগবে তোমার মুখে।

চিকিৎসা  
 
প্রবাসী পিঁপড়ের দল পথেই মরে গেল, আর
পেটভর্তি খিদে ছড়িয়ে পড়ল রাস্তায়-
এ দৃশ্য খেয়ে খেয়ে আকাশের লিভারে রোগ ধরে গেল!
 
এখন শিল্পীরা সব রাষ্ট্রের চিকিৎসায় রত
আকাশ বড় অবহেলায় পড়ে আছে
অথচ দু’ফোঁটা নীরব চোখের জল
সারিয়ে তুলতে পারতো তাকে!

খিদে   
 
বাসি রুটি!
পেটের আভূমি প্রণাম নাও
 
ওকে সমর্পণ নয়, দাও সংশয়
দাক্ষিণ্য নয়, ওকে দাও শ্রমের আবিষ্কার... ...
 
তারপর একদিন বাসি রুটির সুবাসে
ক্ষুধার্ত ঈশ্বর এসে দাঁড়ালো
নশ্বর পেটের ভেতর ঘুরতে থাকলো
এক অবিনশ্বর সংশয়


ভিখারি   
 
আলোআঁধারির ভেতর ভিক্ষাপাত্র নিয়ে
বসে আছে সারি সারি মুখ
 
কবে যে রাজার মতো নেমে আসবে তারাভরা আকাশ
এসে বাড়িয়ে দেবে হাত
 
সকল শূন্য হওয়া দেখব বলে
অপেক্ষা করে আছি আমিও শতসহস্রকাল

 
আকাশের গান  
           
ভোরের মলাট খুলে দেখি মুনিশের পায়ে কাদা
পাখিদের ঠোঁটে ঝোলে শুরুর অক্ষর
আলোর আড়ালে যায় তারাদের দল--
আগুনের বই জুড়ে মাটি মেখে জীবন বাঁচায়
 
সন্ধেয় মলাট বন্ধ করে চোখ বুজি
তারা ফোটে একে একে সাঁওতালি মেয়েদের পায়ে
আকাশজঙ্গল থেকে গান ভেসে আসে

মাদলের তালে তালে মরদেরা ধামসা বাজায়


৪টি মন্তব্য: