সত্যজিৎ রজক-এর কবিতা

সত্যজিৎ রজক-এর কবিতা

কান্না জল


তুমি কেড়ে কেড়ে খাচ্ছো শান্ত সিংহের ঘুম
নাবালক শিশুটি খাদের ভেতর
বারবার কেঁদে উঠছে
 
গভীর অন্ধকারে তোমার চয়নভূমির
খরস্রোত বেড়ে গেলে,
প্রবল ভাবে গলে গলে পড়ে চোখের আগুন!
 
আর নাবালক শিশুটির মায়ের বুকের থেকে পড়ে রক্ত 
 
 
বাস্তবে অন্ধকার হলো একটা নিরাপত্তা
কেমন ভাবে শান্ত হয়ে চুপচাপ বসে থাকা,
বিপদের কোনো আশঙ্কা নেই
 
জানালা খোলা থাকলে 
অচেনা দূরের হওয়ার সাথে আলাপ হয়।
 
গতকালকের চেনা মুখ, চেনা হাসির সঙ্গে
আমি কিভাবে একা একা গল্পে জমে উঠি
 
অন্ধকার আমাকে একটা খোলা পথ দিয়েছে
যে পথে শুধু আমিই একা কখনও  কখনও 
ইচ্ছে মতো হেঁটে থাকি।

 

যে পথে তুই এখন আলো জ্বলে দাঁড়িয়ে আছিস
সেই পথের ওপারে একটা শুষ্ক নদী বয়ে গেছে,
যে নদীর বুকে ভেসে যাওয়ার জন্য এখন আর
কেউ যায় না।
 
প্রবাহ বিলাপ হলো একটা অন্তরঙ্গ জীবন,
যার কোনো রূপান্তর হয় না।
 
আমাকে তো উপহার দিয়ে গেলি একটা অন্ধকার জীবন
এই অন্ধকার জীবনের ভাগ এখন আর কেউ নিতে চাই না
 
তুই যে পথে আলো জ্বেলে দাঁড়িয়ে আছিস 
সেই পথে আর কখনও অন্ধকার হবে না
আলোর ভাগিদারতো সবাই হতে চাইবে।
 

তোমার তলপেটে জেগে আছে জাদুকরী অন্ধকার
তলপেট ঘিরে ঘনঘন আসে এক শৈশব নূপুর ধ্বনি
সেই ধ্বনি শুনতে শুনতে আমি কখন যেন  ঘুমিয়ে পড়েছি!
 
চাঁদ থেকে এক খন্ড মাটি খসে পড়ছে  ক্রমশ মহাশূন্যের দিকে
ক্রমশ আঁধার হয়ে আসছে,
চাঁদ মামার ঘুম পাড়ানি গানে জেগে উঠছে প্রভূত স্নেহজাল।
তুমি শিশুর মতো আগলে রেখেছো আমায় কয়েকটা যুগ ধরে ,
আমি ঘুমিয়ে পড়েছি তোমার কোলে মাথা রেখে।
 
এই ভাবে ঘুমোতে ঘুমোতে তোমার কোলে আমি গত কয়েক জন্মের
বাৎসল্য ফিরে পাচ্ছি! ফিরে পাচ্ছি জন্মলগ্নের মায়া আঁতগন্ধ!

 

বিছানার ডান দিকে গভীর জঙ্গল আর বাম দিকে এক নদী
সারা রাত কেমন চিৎ হয়ে শুয়ে থাকি,
পাস ফিরতে ভয় হয়!
রাতে ঘুম ভাঙে, নদীর দিকে তাকালে দেখি তুমি ভেসে যাচ্ছো
জঙ্গলের দিকে তাকালে দেখি তুমি জঙ্গলের দিকে হেঁটে যাচ্ছো
 
আসলে নদী আর জঙ্গলের মধ্যে পার্থক্য এমন কিছু নেই
দুটোতেই শুধু হারিয়ে যাওয়া আছে!
 
প্রেমের মধ্যে মায়া জিনিসটা এমনি নদী ও জঙ্গলের মতো,

রাতে ঘুম ভাঙলে এরকম হারিয়ে যাওয়ার একটা ভয় হয়।

1 টি মন্তব্য: