সোমা প্রধানের কবিতা

সোমা প্রধানের কবিতা 
 
শ্রাবণ তমসা
 
মাঝরাতে ঘুম ভেঙে দেখি
জানলা গলে টুপ করে ঢুকে পড়েছে
 একপশলা বৃষ্টিমেঘ।
হলুদ বিছানাজুড়ে প্রণয় উৎসব
অন্ধকার গাঢ় হলে
ইলশেগুঁড়ি আদর মাখে
সোহাগীরাত। অস্পষ্ট আলোয়
বৃষ্টিভেজা তোমার মুখ।
সোঁদামাটি, সুগন্ধি হাস্নুহানা
অদ্ভুত আনন্দস্রোত শরীরজুড়ে।
 
নিরুত্তর শ্রাবণ তমসা।
 
 
বৃষ্টি আনতে পারো?
 
আজ সন্ধে জুড়ে আলোর ঝলকানি
এখানে মেঘের ডাকে ময়ূর নাচে
বৃষ্টিরাও হয়েছে অভিমানী
বাতাস কেবল ঝড়ের ফুলকি যাচে।
 
তৃষ্ণ বুক কাতর অপেক্ষায়
ঘুঘুডাকা ক্লান্ত দুপুরপাখি
আনতে পারি বৃষ্টি আঁচল ভরে
হৃদমাঝারে বৈশাখী ঝড় আঁকি।
 
 
কৃষ্ণপক্ষ
 
মনখারাপের গাছে লেগেছে
পাতাঝরার হাওয়া
আকাশ, কালো করে শোনালো
অবেলার গান।
রাতভোর তারার ফুল তুলে
মানভঞ্জন
প্রথম ঊষা, হিমের পরশ
চেয়ে দেখি, তুমি নেই
 
ভরে আছে শিউলিতলা ফুলে ফুলে...
 
 
স্লিভলেস  সময়ের ডানা
 
একদিন আসবো আড্ডা দিতে
বলেছিলে উদাস চোখে চেয়ে।
উড়ে যায় স্লিভলেস সময়ের ডানা
কবিতাপাঠের কাঙ্খিত সময়।
ঘ্রাণচুরির মগ্নতা বুকে বেঁধে
ফিরে আসি ঘরে, নির্জনতায়।
 
তারপর একপূর্ণিমা অপেক্ষায়
চাঁদ ডুব দেয় মেঘের গভীরে
আরও গভীরতর হয় আকাঙ্খা
 
কবে আসবে মায়া?
 
 

অনুসন্ধান
 
ইনবক্স খুলতেই 
একরাশ রক্তিম হৃদয়
 ডানা ঝাপটিয়ে উড়ে গেল।
কোথায় গেল জানো কিছু?
অনুসন্ধান শেষ হলে
ফিরতি ডাকে খবর দিও
অপেক্ষায় বুকের 
ভুবনডাঙা বড্ড ফ্যাকাসে
ওরা ফিরলে একমুঠো
সিঁদুরে মেঘ চেয়ে নেবো।
মনও আজ মৃত্তিকার মত ফুটিফাটা।
 
 

মেঘজীবন
 
এমন কত রাত্রি কাটে একা
মনজানালায় এক টুকরো আকাশ
বৃদ্ধ গাছ, থমকে থাকে সেও
শেকড়জুড়ে গজিয়ে উঠছে ঘাস।
একলা থাকি নিজের মতো করে
এক দুই তিন হারিয়ে যাচ্ছে সব
কৈশোর ভাঙা সেই সব রোদ্দুরে
ঝিকিমিকি করে ভোকাট্টা শৈশব।
 
এখন নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি বেশ
ভুলপথে যত চৌচির হোক মন
যাপনচিত্রে শুধুই দুঃখবিলাস
সুখ! সেতো পরিযায়ী মেঘ জীবন।