তুলসীদাস
ভট্টাচার্য'র কবিতা
বাঘমুন্ডি
পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসে ঘাম
এসময় এপথে আসে না কেউ
যারা আসে ভুল করে আসে
খসখসে দেহে ভরা আছে উষ্ণতা
আতরের গন্ধ ছড়িয়ে ফিরে গেছে
সৌখিন প্রেমিক
পাথুরে চোখে নেই কোন অভিমান
শিলালিপি ঘিরে শুধু জঙ্গল
সাম্প্রতিক রেকর্ডিং এ নেই
গীতবিতানের সুর
ফরমালিনে ডুবে থাকে
গোটা একটা শহর
রাতের শিশিরে পরিযায়ী আঙুলের
ছাপ
শরীরের খাঁজ থেকে মুছে ফেলে
বাঘমুন্ডি ।
কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড
আমার বুকের ভেতর
একটা পলাশীর প্রান্তর
একটা কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড
ভাগীরথীর শীতল স্রোত
আমার বুকের ভেতর একটা শোক
সকালের দু-কলি রবীন্দ্র সুর
সন্ধ্যা নামলেই নজরুল
নক্ষত্রের মৌনতা নিয়ে দেখি
অকাল গর্ভপাতে বিপর্যস্ত
পৃথিবী
গোর্গাবুরু থেকে হাইরাইজ
বনসাই সুখে পরিবৃত্ত সংসার।
আলোকিত রাত
গাছের পাতায় যখন রাত্রি নামে
মনের ভেতরও ঝুপ্ ঝাপ্
নিশুতি রাতে ঘুঙুর পায়ে
কে যেন সুর তোলে
একা-একাই পাহারা দিই ভুতুড়ে
বাড়ি
ভোরের আলোয় থেমে যায় ধ্রুপদী
ছন্দ
দূরে আলোকিত জানালার দিকে
চেয়ে থাকি
পাখির ঠোঁটে পাকা বটফলের মত
টকটকে সূর্য
জ্বলন্ত আগুনে পুড়ে যায়
আমাদের সাবেকী ঘর-দোর।
প্রচ্ছদ
অগ্নিসাক্ষী রেখে এ কবিতা
তোমার জন্যই লেখা
শাখা-পলা,সিঁথিপথ ,চৌকো উঠোন
একটা চোরাস্রোত টেনে নিয়ে যায়
খাদের গভীরে
মৃত্যু না নবজন্ম !
ভাটফুল জীবন পড়ে থাকে
শতযোজন দূরে
অন্ধকার সিঁড়িঘরে
স্বরবর্ণগুলি ধুলোয় ঢাকা
ধুলো সরিয়ে হাত রাখি প্রচ্ছদে
।
বাষ্পমোচন
ঘুমের ভেতর এক আগ্নেয়গিরি
মাটির নিচে ভূকম্পের
এপিসেন্টার
দন্ডচুম্বকের আকর্ষণ-বিকর্ষণ
জমি থেকে সরে যাচ্ছে মাটি
সামনে-পিছনে শুধু বালি
রুক্ষ কাঁটাঝোঁপে লুকিয়ে রাখি
বাষ্পমোচন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন