কনিষ্ক দেওঘরিয়া'র কবিতা
শিশুকাল
শীতকালে খামারে রোদ আসত সাড়ে আটটার পর
যখন শিশু ছিলাম ঠাকুমা অনেক গল্প শোনাতেন
আমি তাঁর বুকের স্তনের উপর শুয়ে থাকতাম স্তন্যপায়ী জীবের মতন
আমি রাতে মায়ের সাথে ঘুমোবার পর ঠাকুমা পায়ে সরষের তেল লাগিয়ে দিতেন
আমাদের বাড়িটা মাটির ছিল
আমরা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর বাড়িটা জেগে থাকত
হঠাৎ হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে বাড়িটা জেগে ওঠে স্বপ্নে
এখনো মাঝেমাঝেই ঠাকুমার কথা মনে পড়লে দীর্ঘকাল আগে আমার পায়ে লাগিয়ে দেওয়া সরষের তেলে পিছলে পড়ি ৷৷
বিলাসিতা
বাবাকে ফুটপাত ভেবে চব্বিশ বছর হেঁটেছি বাবার পিঠ বরাবর
কাজ থেকে ফিরে বাবা যখন ক্লান্ত হয়ে বসে থাকে
তখন
আতসবাজির মতো একটা নষ্ট আগুন জ্বলে আমার চোখে
হাতে জ্বলে সিগারেট
এই জীবনের নাম দিয়েছি বিলাসিতা ।।
এভাবেই
জন্মলগ্ন থেকে এই তো দাঁড়িয়ে আছি
শূন্যতার ভেতর শূন্যতা
মেঘের ভেতর মেঘ
ক্ষুধার ভেতর জল পান করে বেঁচে আছি
প্রতিদিন ধরে রাখি নির্জন ব্যাধি
ডুবে যাওয়া জাহাজের খোঁজে সূর্য অস্ত যায়
এভাবেই
এভাবেই ।।
শোক
দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে অনেক কিছুই বলা যায়
যে ভাবে আত্মসমর্পণ করতে পারব না মানুষের কাছে
একাকীত্বের কাছে পৌঁছানোটা জরুরী
মন খারাপ হবে
ভেঙে চুরমার হবো
তারপর যত শোক কবিতার উপর চাপিয়ে দিয়ে গা ঢাকা দেওয়া জরুরী ।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন