গৌতম রায়-এর কবিতা

গৌতম রায়-এর কবিতা

অগ্রগমন

মেনকা সকাল সকাল 

জল ঢেলে ঝাড়ু দিয়ে 

একটি তকতকে উঠোন সাজায়

সূর্য সারাদিন প্রেমে প্রেমে 

ভরায় বাতাবিয়া অডিশন

 

সেই প্রেমে সেঁকি  এপিঠ ওপিঠ

বাড়ে আম-উচ্চতা

এ ত‍্যাগ স্বীকারের ভাগবৎগীতা 

ভুলবো কী করে ?

 

আছে আমাদের রুকস‍্যাক

আছে আমাদের বৃহৎ গ্রন্থাগার

এ গ্রন্থপাঠ শরীর ও চোখের পার 

এমন দৃষ্টিপাত 

তোমাকে উপেক্ষা করবো কী করে?

 

মা ফ্লাইওভার এমন তোলপাড় চিহ্নে চিহ্নে

আঁকি ভালোবাসা ,

এ ভালোবাসার বহু রৈখিকতায়

দুকদম অগ্রগমন 

 

মায়েরা কোথাও যায় না

সেই দিনটার কথা 

আজন্ম নজর কাড়া তিলের মতো

বড়ো বুকে লেগে আছে

আমি তখন ষষ্ঠ

ঝমঝম বর্ষাকাল

অর্ধবার্ষিকী

তায় আবার গণিত

 

চার পাঁচ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে 

আমি মা

একটি সাবেকি বাংলাছাতা 

মাথায় তোয়ালে 

বাগ না মানা জলধারা

সারা রাস্তায় বিদ্যুৎ বজ্র

জলের ক্ষরতোড় বুকেও

আমি মা একাকার

শুধু বর্ষণের সাথে করে যাচ্ছি লড়াই

 

অবশেষে পাড়া এস এন হাই

ততক্ষণে গণিত অনেকটা গেছে এগিয়ে

আমি কী লিখেছিলাম জানি না 

তবে সারা পরীক্ষা কক্ষে জুড়ে ছিল

মায়ের জন্য সন্তানের ফিরতি পথের বুকধড়পড়

যার ই সি জি গ্রাফিক্স আজও বুকে নিয়ে বেড়াই

মা তুমি ঠিকঠাক পৌঁছালে তো ?

মায়েরা কোথাও যায় না

মায়ার মতো কুলুঙ্গির মতো সঙ্গেই থাকে।


চির আকাঙ্ক্ষিত শ্রাবণ 

তোমার মাটি ও সৃষ্টি থেকে খাদ‍্যরস ও খনিজ নিই

মনন ও মস্তিষ্কের ঝাড়লন্ঠন থেকে নিই

আলো উত্তাপ আরও কিছু এবং

তারপর পলাশের আগুন সাক্ষী রেখে

প্রিয় নির্জন ফুটিয়ারির মতো বাষ্পমোচন


টানে টানে আঁকি আগুন মেঘ

আঁকি ব্রহ্মজ মেঘ

আঁকি পক্ষজ মেঘমালা

হে ধন‍্য সময়ী তুমি দাও অবকাশ

আশ্চর্য অণ্বেষার দীর্ঘ চড়াই

আমি সিঁড়ি ভাঙি মেঘেও

মেঘের ল‍্যান্ডিং রসায়ন থেকে বর্ষাঋতুর আগল ভেঙে কে ভেজে

কে ভেজে সারাদিন ?

তুমি তুমি তুমি

 

তুমিই দিয়েছো কতো ভাসমান জিটি

আমি বাঁধি সযত্ন নৌকোগুলি

দেখি আশরীর স্থায়ী অন্তরা সঞ্চারী আভোগ বর্ষাকাল

তারপর সাজাই যৌবনবতী কাঁসাই

তালসারি মোহনা লালকাঁকড়ার বঙ্গোপসাগর

 

আবার সময়িমায় নতুন মেঘের খোঁজ

সেগুনের আকাঙ্ক্ষিত সল্কমোচন

হে চির আকাঙ্ক্ষিত শ্রাবণ 

তুমি কী দেবে না মেঘকলোনি

যেখানে আমার বর্জ্যহীন জলপান ?


কিলক 

মাথা ধরলে কপালে উঠে আসুক 

রোল পেইন বাম

এমন বিড়াল হাঁটা আশা রাখি না

 

শুধু নস্ট্রিলে যাতায়াত থাক 

প্রিয় মাকু 

দু একটি হাঁচি এসে ঝাঁকিয়ে দিক কনজেশন

ক্ষেতের নরম মাটি এনে 

সূর্যছায়ায় ঘর বাঁধুক ভোমরা 

 

বই আকরিক, জীবাশ্ম ফসিল 

 রোজ শিরীষ তলায় যে মায়েরা ক্লোরোফিল সাজিয়ে বসান পশরা

তাঁদের করি প্রণাম

কুলেখাঁড়া বয়ে আনে হিমোগ্লোবিন

থানকুনি  উপহার দেয় একটি সুঠাম পাকস্থলী

ব্রাহ্মী নিয়ে আসে যত জটিল তালার চাবি

ওগো রূপবতী মায়েরা 

তোমাদের সঙ্গে চলে কী কোনো দর দাম ?

 

বৃদ্ধা মা আমার 

এখনো তোরঙ্গ খুললে পাওয়া যাবে

লাল শালুতে মোড়া মাতৃত্বের 

নাড়ি চিহ্ন গুলি,

মা-তো কবে ছেড়ে দিয়েছেন 

এ গহন জঙ্গলে একদিন

আমরা চরে খাই

আর এই মায়েরা 

তাঁদের সংগৃহিত ডুমুর মূলুন কচড়া

শুশুনি থানকুনি বেঁধে বেঁধে 

পুষ্টি সঙ্গীতে এগিয়ে নিয়ে যান

আমাদের মালগাড়ি,

আমরা ডাব্বারা আকরিক বই

বই জীবাশ্ম ফসিল ।

 



 

 

 

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন