চৈতালি ধরিত্রীকন্যা'র কবিতা
অঙ্কের খেলা
আবাহন আর বিসর্জনের
খেলায় মেতেছিল কেউকেউ
ভন্ড ললাটের ঘ্রাণ ছড়ায়
স্বচ্ছ বাতাসে।
ঈর্ষার বেতবনে ঢুকে পড়ছে
জলসাঘর।
এত যে আলোচনা রাখা হয়
তাঁবুর ভেতর
সব ধুয়ে যায় প্রবল ঝড়ে।
শাদা রঙে ফুলফুল মাটি
যাহা সত্য তাহাই সুন্দর।
গদ্যের পাহারাদার বোঝে
একটা ছোট্ট ফুৎকার।
সৃষ্টির উল্লাসে
আমাদের বাগিচা ভরে যায়।
বিগত যোগবিয়োগের অঙ্ক
নিজেকে হারিয়ে ফেলে একাই।
আর
নতুন নতুন তাঁবুতে
পথশিশুর আশ্রয় রেখে যেতে হয়
আমাদের।
ঘুমব্যাগ
রাত্রির এলোচুল থেকে এবার বৃষ্টি নামবে।
আমি বৃষ্টি মাখবো না গায়ে।
আমি ঘুমোবো।
ঘুমব্যাগ থেকে বের করে
নিয়েছি একটা শূন্য
শূন্যের ভেতর আমার মাথা রেখেছি।
বাইরে বাদল আর বৃষ্টি
জড়িয়ে জড়িয়ে চুল আচড়াচ্ছে।
আর আমার মাথা শূন্যের গর্তে
আরো গভীরে পৌঁছে যাচ্ছে।
শরীরে কাশফুলগুলো উড়েউড়ে
ফোটা ফোটা আসছে।
ওরা জলকেলী খেলছে
আমার মাথা ডুবছে আরো গভীরে
শূন্যটা আমাকে ভাসিএ নিএ যাচ্ছে
সাইবারনেটিভের বাস্তুজলে।
আমার ওজন
এখন মাইনাস শূন্য কেজি।
শূন্যের গর্তে ডুবতে ডুবতে
বৃষ্টিকে বল্লাম ; তুই যা।
আমি তো এসে গেছি।
লাল পানি
এ বেলাতেও স্নান সারতে ইচ্ছে হয়!
ডুয়ার্সের ঘন জঙ্গলে যাওয়া নিষিদ্ধ
ওদের এখন মাতৃত্বের সময়।
এখন প্রবল বর্ষা
অম্বুবাচীর মরসুম।
ভেসে যাচ্ছে আহ্লাদের জমাট ক্লান্তি
বাতাসে ইমিউনিটির গন্ধ
দূরন্ত বেগে ভাঙছে শিলি শিলি রাগ
বৃষ্টি ছিল বলেই এ বেলাতেই
আলতা মেখেছে পায়।
এখন লাল পানিতে মুখ ঢেকেছে আম্মা।
প্রদীপের আলো জ্বেলে দিই
শঙ্খ বেজে উঠলেই
আমার চারপাশে বিসমিল্লা খাঁ
মাথার টিকলীতে সানাই বাজান।
শঙ্খ বেজে উঠলেই
সরোদের শরীর কোলে নিয়ে
বসে পড়েন আমজাদ আলি খাঁ ।
শঙ্খ বেজে উঠলেই
জাকির হোসেনের কোঁকড়া চুলের ভেতর কাহারবা দাদরা
দুহাতে তাল দেন
শঙ্খ বেজে উঠলেই সেতারের তিন তারে অন্নপূর্ণাদেবী চুপচাপ
দরজা বন্ধ করেন
সবাই জানে
রবিশঙ্করজীর তালে মঞ্চে মঞ্চে
হাততালি ঝরে পড়ে
আমার শঙ্খ বেজে উঠলেই
সুচিত্রা কনিকা রবীঠাকুরের
পায়ের কাছে দৌড়ে যান।
শঙ্খ বেজে উঠলেই
অন্নদা শঙ্কর তাথৈ নেচে
রামধনু ছড়ান।
মণিকট্টমের থালা আহ্লাদ মাখে
আবার শঙ্খ বেজে উঠলেই প্রতীমাবড়ুয়ার
মইষাল বন্ধু দোতরার উঠোনে
মঞ্চ সাজান। তোর্ষা তিস্তা ছুঁয়ে আব্বাউদ্দিনের চটকা দরিয়া ভেসে যায়
পদ্মা মেঘনার জলে।
শঙ্খ বেজে উঠলেই
মুরলীধরের বাঁশিতে
পুজোর ঘরে মূর্ছা যান মীরাবাঈ ।
আর আমি
পারস
এবার শরীর পেতে দিলাম।
নে খা
গাছের শেকড় নাড়ালাম
নে খা
কালো মেঘ এবার বৃষ্টি দে
নে খা
বাতাসের আশাবরী
নে খা
আকাশগঙ্গার সন্তুর
নে খা
রুমালের লালারস
নে খা
আমি এবার উপুর হলাম
নে খা
পাহাড়ের নিস্তব্ধতা
নে খা
নদের নাগর
নে খা
তুরুপের তাস
নে খা
বাহুবলীর দড়ি ছিঁড়ে আয়
নে খা
সর্বাঙ্গে আগুন ঢেলেছি
নে খা
কাঁকড়ার ধন
নে খা
বিড়ালের গুটিগুটি পা
নে খা
যদি খেতেই না পারিস
তবে
' বাপী বাড়ি যা '।
অপূর্ব মণিমালা!
উত্তরমুছুনদারুণ লাগল
উত্তরমুছুন