রিনা রাণী দাস-এর কবিতা
রুবাইয়্যাৎ
রিনা রাণী দাস
১
শেষের আলোয় দেখছি তোমায় প্রথম আলোর বানে।
পুবে-পশ্চিমে দোটানা দুকূলে
নাওর নি 'রানি' জানে?
মাঝে কাঁটাতার এপার ওপার বিষে অন্তর কাঁদে...
কোন ভুল পথে ছিন্ন হলাম জ্বালা বাড়ে আজও মনে।
২
হাবাগোবা পাণ্ডুর সময়… জুমক্ষেতের সন্ধ্যায়
আলাভোলা রবি’র কিরণ ধরে রাখে জানালায়;
অভিমানী দরবেশী চোখ দাঁড় বেয়ে যায় দিশা...
হঠযোগী ক্ষণকাল ছেড়ে অসময় তোলো খেয়ায়।
৩
শূন্যে ভাসমান ছাই, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ শুদ্ধ হাওয়ায়
মিশে যাই কবিতায়; বিবর্তনে সবই যে পোড়ায়।
মলিন চিঠির ভাঁজে- না-কথারা একতারা সুরে...
গ্রাভিটির ওই পারে...তারা হয়ে কবিতা হারায়।
৪
তালতো ভাইয়ে চুপিচুপি আলতো ছোঁয়ায় ফাঁদ পাতে,
আইরনি অবুঝ হৃদয় কিছু না বুঝেই জলে মাতে।
হুলের আঘাতে ‘কলি বিকলাঙ্গ হলে-সারাটা জীবন...
নিজ ছায়াকেও পায় ভয়। ক্ষত-কিলবিল করে রাতে।
৫
তুরুপের তিন তাস সুখানন্দ খোঁজে সারা রাত,
এলেবেলে ফোঁটা ওঠে চুরুটের ভাঁজে কুপোকাত।
স্বর্গ-সুখ খুঁজে ক্লান্ত, বসে হাসে হাবিয়া দোজখ...
ক’টি তাস তুলে নিলে গন্ধমী বাগান ডরে মাত।
৬
চান্দিছোলা স্বয়ম্ভু আকাশে হঠাৎ মেঘের গর্জন
ঘনঘোর জানালা জানালো এখনই লাগবে তর্পন,
শামুক-খোল বিরান মাঠে জীবনের স্বাদ খোঁজে...
জগৎ সংসারের চেনা সুর। কান্না হাসিতে অর্জন।
৭
আশার নদীটা মাঝে মধ্যেই সরু হতে চায়,
তবুও খনন করে জীবনের স্রোত বয়ে যায়।
এক্কা দোক্কা দান তুলে নিতে...ভাগ্যের ঢোল---
ষাঁড়ব’র জালে। এ কেমন বিধি? মানি না তোমায়!
৮
অ্যালকোহোলিক রাত। দু'জন দু'পাশে বিছানায়
ঘামের উষ্ণ মৌতাতে নিকোটিনের নীল ধোঁয়ায়,
নাভিগন্ধ মৃগয়ার---অলস অলিন্দে চুপ-ঘুম...
নাহ! নাহ! নাহ! তুচ্ছ? অদ্ভূতুড়েবীর্য...শূন্যতায়।
৯
ঢাউস মার্কা মানচিত্রের ছোট কারিগর!
বিভেদের সুর বাজে মর্মে পাছে অজগর,
সব কিছু বুঝে গেলে গিলে খাচ্ছে বরাভয়
সোনালী রোদ তবুও হায়! কেউ নয় কারো পর।
১০
বিবাগী- রাত হলে পাখির কুজনেও সময় স্থির হয় খুরের শব্দেই
পাতাবাহার রাত, একা দুঃখ ঘষে ফলিত ক্লান্তিতে...কাটে সমৃদ্ধে;
জলভরা বক্ষে স্বরাজ ঊর্মির প্রাণের উচ্ছ্বাসে ছেঁটে ফেলি বিষাদ...
চাঁদ-সোহাগী কেউ অস্পষ্ট ছোঁয়ায়
কাঁপিয়ে তোলে যদি সহস্র অব্দে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন