রিনা রাণী দাস-এর কবিতা

রিনা রাণী দাস-এর কবিতা

রুবাইয়্যাৎ
রিনা রাণী দাস 
শে‌ষের আ‌লোয় দেখ‌ছি তোমায় প্রথম আ‌লোর বা‌নে।
পুবে-প‌শ্চি‌মে ‌দোটানা দুকূ‌লে নাওর নি 'রা‌নি' জা‌নে?
মা‌ঝে কাঁটাতার এপার ওপার বি‌ষে অন্ত‌র কাঁ‌দে...
‌কোন ভুল প‌থে ছিন্ন হলাম জ্বালা বা‌ড়ে আজও ম‌নে।

হাবাগোবা পাণ্ডুর সময়… জুমক্ষেতের সন্ধ্যায়
আলাভোলা রবি’র কিরণ ধরে রাখে জানালায়;
অভিমানী দরবেশী চোখ দাঁড় বেয়ে যায় দিশা...
হঠযোগী ক্ষণকাল ছেড়ে অসময় তোলো খেয়ায়।

শূন্যে ভাসমান ছাই, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ শুদ্ধ হাওয়ায়
মিশে যাই কবিতায়; বিবর্তনে সবই যে পোড়ায়।
মলিন চিঠির ভাঁজে- না-কথারা একতারা সুরে...
গ্রাভিটির ওই পারে...তারা হয়ে কবিতা হারায়।

তালতো ভাইয়ে চুপিচুপি আলতো ছোঁয়ায় ফাঁদ পাতে,
আইরনি অবুঝ হৃদয় কিছু না বুঝেই জলে মাতে।
হুলের আঘাতে ‘কলি বিকলাঙ্গ হলে-সারাটা জীবন...
নিজ ছায়াকেও পায় ভয়। ক্ষত-কিলবিল করে রাতে।

তুরুপের তিন তাস সুখানন্দ খোঁজে সারা রাত,
এলেবেলে ফোঁটা ওঠে চুরুটের ভাঁজে কুপোকাত।
স্বর্গ-সুখ খুঁজে ক্লান্ত, বসে হাসে হাবিয়া দোজখ...
ক’টি তাস তুলে নিলে গন্ধমী বাগান ডরে মাত।

চান্দিছোলা স্বয়ম্ভু আকাশে হঠাৎ মেঘের গর্জন
ঘনঘোর জানালা জানালো এখনই লাগবে তর্পন,
শামুক-খোল বিরান মাঠে জীবনের স্বাদ খোঁজে...
জগৎ সংসারের চেনা সুর। কান্না হাসিতে অর্জন।

আশার নদীটা মাঝে মধ্যেই সরু হতে চায়,
তবুও খনন করে জীবনের স্রোত বয়ে যায়।
এক্কা দোক্কা দান তুলে নিতে...ভাগ্যের ঢোল---
ষাঁড়ব’র জালে। এ কেমন বিধি? মানি না তোমায়!

অ্যালকোহোলিক রাত। দু'জন দু'পাশে বিছানায়
ঘামের উষ্ণ মৌতাতে নিকোটিনের নীল ধোঁয়ায়,
নাভিগন্ধ মৃগয়ার---অলস অলিন্দে চুপ-ঘুম...
নাহ! নাহ! নাহ! তুচ্ছ? অদ্ভূতুড়েবীর্য...শূন্যতায়।

ঢাউস মার্কা মান‌চি‌ত্রের ছো‌ট কা‌রিগর!
‌বি‌ভেদের সুর বা‌জে ম‌র্মে পা‌ছে অজগর,
সব কিছু বু‌ঝে গে‌লে গি‌লে খাচ্ছে বরাভয়
‌সোনালী রোদ তবুও হায়! কেউ নয় কা‌রো পর।

১০
বিবাগী- রাত হলে পাখির কুজনেও সময় স্থির হয় খুরের শব্দেই
পাতাবাহার রাত, একা দুঃখ ঘষে ফলিত ক্লান্তিতে...কাটে সমৃদ্ধে;
জলভরা বক্ষে স্বরাজ ঊর্মির প্রাণের উচ্ছ্বাসে ছেঁটে ফেলি বিষাদ...
চাঁদ-সোহাগী কেউ অস্পষ্ট ছোঁয়ায় কাঁপিয়ে তোলে যদি সহস্র অব্দে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন