রাজীব ঘোষালের কবিতা


রাজীব ঘোষালের কবিতা

জলতরঙ্গ বুনে

জলতরঙ্গ বুনে সম্পর্কের গায়ে চাপালে
বোঝা যায় কতটা ওম...
দেহের শিরা উপশিরার জটিল জাল
কোথাও যেন জীবনের সঙ্গে মেলে...

অনেক পরিশ্রমে তোলা নকশা,
কাঁথা অথবা সোয়েটারে বাহবা কুড়ালে
মনে হয় সার্থক জনম...

ময়ূরের পেখম তুলে নাচের আনন্দই
যেন অনিবার্য জীবনের
সাত রঙ হয়ে ওঠে...

অন্যরকম স্বপ্ন

আজকাল অন্যরকমের স্বপ্ন আসে ঘুমে...
নারকেল গাছের ডানা গজিয়েছে যেন
আকাশে বসে চাঁদের সঙ্গে
রুটি ভাগ করে খেতে খেতে
কেবলই অমৃতের কথা মনে আসে

একটু দূরে দাঁড়িয়ে বিধুমুখী
হাসিমুখে কৃষাণী সেজে
কেটে ফেলছে
আকাশভরা সোনা-গমের ক্ষেত...

এই দৃশ্যে কতজনের যে উদরপূর্তি হল!

খোঁজ

কড়াইয়ের ভেতর খুন্তি নাড়াতে নাড়াতে
সুপুরি-বনের কথা কেউই ভাবে না...
কেউই ভাবে না পুকুরে ছিপ ফেলে
ভাসতে থাকা চাঁদ গিঁথে তোলার কথা

অথবা চাকে মধু জোগাড় করতে
মৌমাছির ডানা-ভাঙা পরিশ্রম কতটা জরুরি!

চাঁদ আর মধুর সুনিবিড় সম্পর্কের খোঁজ
কেবলমাত্র মৌলিরাই রাখে...
তারা জানে ফুল ফোটার প্রক্রিয়াটি
অবিশ্বাস্য অঘটন...

ধ্বনি

ঝুমকোলতার ভেতর ঝমঝম ধ্বনি
পাঁজরে কাঁপন ধরায়...
ছটফট করতে থাকা চোখের জল
ডানা ঝাপটাতে থাকে...
হাহাকারে সওয়ার সন্ধ্যার শাঁখে
ফুঁ দিলে কেমন যেন মনে হয়
কিছু কিছু সুর
বিলম্বিত রাগে বেজে ওঠা ভালো...

মরুঝড়ে ঢাকা পড়া ভালো
প্রিয় মরুদ্যান...

পাষাণী প্রাণ পেলে

আনমনা রাখাল ঝোপের অনেক ভেতরে
খুঁজে পায় পাষাণ প্রতিমাটি।
সুডৌল গড়ন তার...

সে ভাবতে থাকে;
যেহেতু ফুরিয়ে আসছে গোচারণভূমি...
তাই পাষাণী প্রাণ পেলে
তাকে নিয়ে চম্পট দেবে আকাশে...
দুধ-পথ জুড়ে ভরে উঠবে
বাছুরগুলির পেট।

আর আকাশ গঙ্গার পাড়ে
ছোট কুটির বানিয়ে
সে পাষাণীর সঙ্গে ঘর বাঁধবে...

২টি মন্তব্য: