পায়েলী ধর-এর কবিতা

পায়েলী ধর-এর কবিতা

ব্যথা নামক বন্ধুকে

কতটুকু জুড়ে ছিলে?
কতখানি ছিঁড়ে গেলে ভয়?
বিরহ নতুন কিছু?
বিরহ কি চেনা কিছু নয়?

ফিরে যাওয়া আলো সব
ধরো যদি ঠিকানাবিহীন
চুপিসারে ভেসে গেছে
আমাদের ভালো-থাকা দিন

ভাতজল মাপা ঘর
জ্যোৎস্নার টানটান বুক
নোনামটি আধ ভেজা
সেতু-গান-পুরনো অসুখ

এই শুধু পরিমিতি?
এই তবে সবিশেষ দেনা?
বিরহ পুষেছি আমি
বিরহ হৃদয় দিয়ে কেনা

জানি ফের শূন্যের
কথা বলে ব্যথা সঞ্চয়
বিরহ নতুন কিছু?
ভেবে বলো, বিরহী সময়


ফুৎনলের জীবন

ফুঁ-এর সমান একটা জীবন পিঠে
এবং দাওয়ায় আগুন ছিল তাজা
এই সামান্য সাহস কথা বলে
এরচেকঠিন ধাঁধারও নেই পথ
গোলাপ-বারুদ-তুল্যমূল্য রুচি
এখন-তখন-যখন-যেমন চলে
চাঁদের মতো অন্ন ফুটুক ঘরে
আমরা-ওরা জ্যোৎস্না মেখে খাই
আমরা-ওরা রাষ্ট্র-রাষ্ট্র খেলি
কঠিন পাশা, বিপদগামী বাঁক
ফুঁ-এর ওপর হাত বুলিয়ে দাও
ফুঁ যেন মা বেঁচেবর্তে যায়
ফুঁ-এর মতো একটা জীবন পিঠে
এবং দাওয়ায় আগুন আছে তাজা
এসো, আমরা জলের দরে কিছু
খুচরোখাচরা সময় ফেরি করি

বিবাহ

এভাবে সম্ভ্রান্ত হলে রাত
বিযুত পালক ভেজে নিয়মহীন জ্বরে
ওখানে ঘোর-শেষে ঘর বাঁধা
মসৃণ আলোর ফতোয়া হাসে
কারও পায়ে পথ উঠে গেছে
কোনও পা নাকাল নবিশ
তথাপি সুচতুর ঘুণ
স্বস্তিকে গুলে রাখে এয়োতি ফণা
কিছু শববাহী ভোর
নিচু দীর্ঘস্বর

আর যা-কিছু ব্যক্তিগত

তেমন কিছু বলার ছিল না তো
তেমন কিছু বলারও কি থাকে
অংশত সব মেঘলা ঘরের ভিড়
তুমি খুঁজছ ফেরার আলোটাকে

ঠিক যেখানে উলটো সরার মতো
আকাশ উপুড়, ব্যথায় বর্ণ ভিজে
তোমার হাতে জল ধরে না, আঁচও
তুমি হাঁটছ নিজের সাথে নিজে

বাঁশির মতো কান্না শিখে নিয়ে
যত্রতত্র বিছিয়ে রাখছে শোক
কেউ জানে কি, কেউ কি জেনে গেছে?
তুমি একজন আগুন-পোড়া লোক

মায়া এবং দীর্ঘকালীন ছায়া
নাছোড়, কেমন জাপটে ধরে রাখে
আগল ভেঙে ছুটতে চেয়ে তবু
জড়িয়ে ধরছো নিজের ছায়াটাকে


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন