মধুমিতা কর্মকার-এর কবিতা

মধুমিতা কর্মকার-এর কবিতা


স্বাগত

সেই কৃষ্ণচূড়া মরা গাছটা...
বহু বছর পর দেখা।
ফুলেভরা...
একমুঠো ফুলের সম্ভাষনে জানালো স্বাগত।
রিক্ততার মাঝেও অকৃত্রিম এক পাওয়া
বিবর্ণতার ভারী জীবনের পাশে হালকা হাওয়া।
ঘোলাটে ছবিগুলো মুহূর্তে সচল হয়।
মেঘ করে, তারপর বৃষ্টি...
ক্ষয়িষ্ণু চলমানতার পাশে লাল নীল হলদে দাগ পথ তৈরি করেছে,জীবনপথ...
স্ট্রীটলাইটের হলদে আলোগুলো সন্ধের গা ঘেষে বসে।
গল্প জমায়।
রাত ফুরোয়।
কত মায়ের সন্তান গন্ধে স্নিগ্ধ সকাল আসে...

ক্ষয়ের-পথে

গুমরে কাঁদছে সারা শহর,
ধুঁকছে পৃথিবীর পাতাঝরা বিকেল
বসন্ত এসেও ধরা দেয়নি।
স্নিগ্ধতার ফাঁকে ফাঁকে জন্ম নিয়েছে গোপন ক্ষয়,
ঘরবন্দি,অসহায় সময়ের হাতে আকাশ ছোয়া বিঞ্জানের চাবিও আজ অকেজো।
পথের কিনারে কিনারে হাঁটছে দুঃসময়,
সমাজের মাস্তুল উলোট পালট।
গতির পাল হাঁটছে ক্লান্তিতে নিঃশব্দে
মুখ থুবরে পড়ছে সভ‍্যতার সিঁড়ি
পরিযায়ী পাখির পায়ে পায়ে রাস্তায় ভেসে চলে ঘরমুখী মানুষ---
ইঞ্চি ইঞ্চি পথেও ভয়ের রক্তবীজ
তবু হারবে না জীবন...


আগমনীর মেঘদূত

মেঘ এখানে এসে অন‍্যমনস্ক হয়ে যায়
পেঁজা তুলো যেন অশ্বিনী সুর বয়ে আনে,
রোপণ করে কাশ ফুলের রঙে রঙ মিলিয়ে সখ‍্যতা।
ভাটিয়ালি গান, ঢ‍াকের কাঠির ঢ‍্যাংকুরাকুর গন্ধ,
সনাতনী দেবীর আরাধনায় মা মা ডাক ওঠে
ভেসে আসে শিউলির ডাক...
অন‍্যমনস্ক মেঘ থেমে দাঁড়ায় এখানে।
হাত ধরে পদ্মের পাপড়ির
মেঘের পালকে ডানা মেলে পরিযায়ী পাখির দল।
শিশির ভেজা ঘাসে ঘাসে এক চিলতে রোদ মুক্ত হয়ে ফোটে।
অভিসারী মেঘ রঙে রঙে মাখে রঙ...
নীলাকাশ, রোদ, মেঘে শরতের মা দুর্গা
বসন্তের আবিরে হয়ে ওঠেন বাসন্তী।

ওগো মেঘ তুমি যে আমার জন্মান্তরের দূত...


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন