চঞ্চল দুবে-এর কবিতা
আয়ুষ্কাল
সে ছিল কীর্ত্তন তার
অতি ধীর প্রবাহমানতায় নৈঃশব্দ্যে নিহিত চিৎকার।
তার মূর্ত অমূর্ত চাহিদায়
কাঙ্খিত লাবণ্য স্রোতে মন্ত্রপূত কলসি ভেসে যায়।
কলসির ভিতরে মোক্ষ
পরিত্যক্ত মঞ্চের নাটক ;
অতিরিক্ত শুদ্ধাচার যাপনের জন্য নিরর্থক ।
প্রবৃত্তি দ্বন্দ্বে নামে
নিবৃত্তির সাথে তার প্রবল বৈরীতা ;
রুটি ও রমনী খোঁজে ক্রমবিকাশের গল্পে সর্বত্রগামিতা।
ইচ্ছাভিত্তিক নির্মাণ
স্বইচ্ছায় উপড়ে ফেলা পথ ;
কখনো সে স্বয়ং গৃধিনী, কখনো শান্তির পারাবত।
সান্নিধ্য ও সুখভ্রম
দেখি তোর লতানো শরীরের সঙ্গীত
শব্দাতীত আশ্চর্য সুরেলা ;
একান্ত বিপন্ন সুখে আমার অসুখ চিরকাল।
কী এক অদ্ভুত ধ্বনি বেজে ওঠে আকাঙ্ক্ষার চিরহরিৎ বনাঞ্চল ছুঁয়ে ! অসনাক্ত মুগ্ধতা সমূহ
কী কৌশলে রচনা করেছে মায়াজাল !
বুঝিনি, সামান্য আমি তোর জন্য বিলম্বিত করেছি অগ্নিস্নান, বিকেলের দীর্ঘ ছায়া কুমারী ওষ্ঠের ন্যায় উপমাবহুল ;
আমি উপেক্ষিত দ্বিজ, প্রত্যাশার প্রান্তর পেরিয়ে এসেছি মোহহীন নবজন্ম সাথে।
তোর জন্যে পল্লীর সমস্ত রাস্তা জেগে থাকে, আমি তার ধূলায় পা রেখে চলে যাই একা একা স্পর্শ ব্যাকুল ;
শেষত সবাই যায়, তবু জাগ্রত মহাসময়
প্রশ্ন রাখে--কে আগে ? কে আগে?
আমি তো অনেক ঘুম ডিঙিয়ে এসেছি জাগরণে, অনর্থক কথার শব্দশিলা উত্তরপুরুষের জন্য গেঁথে রেখেছি বুকের মধ্যে
সেই বুকে তোর দংশন ভুলিয়েছে পথশ্রম,
প্রতি দন্ড পলে মৃত্যু পরিক্রমনের বিপরীতে ; আমি তোর লতানো শরীর পিতার তর্জনীর বিশ্বাসে আঁকড়ে ধরে নিষ্ক্রমণের পথে অসঙ্কোচে এগিয়ে গিয়েছি।
পুনর্জন্ম
না যাবো না । বললেই কী যেতে হবে --
আমার জন্য রাতপাখিদের ঘুম আসে না !
আমার জন্য গন্ধফুলের শুকিয়ে যাওয়া
সঞ্চিত সব কান্নাগুলোর মূল্য জানি ;
ট্রেন চলে যায় নিয়ম মেনে সন্ধ্যাবেলা
যাদের মুখে সকাল বেলার আলোরকুচি
যাদের জন্য বসন্ত দেয় টাটকা পলাশ
অপূর্ণতা নিয়েই তাদের সঙ্গে আছি।
হ্যাঁ বলেছি, আবার আবার বলবো আমি
গড়িয়ে পড়ে, ঠোক্কর খায় নুড়ি পাথর
তাই বলে কী ঘুরে দাঁড়ানোর নিষেধ আছে ?
দেখি পর্ণমোচী গাছের নিচে কামান্ধ রাত ;
দেখি নিগৃহীতার আর্দ্র চোখে স্বস্তিবাচন
কাদের বুকে লালন করে আত্মাহুতি !
না যাবো না বললেই কী আর যাবো না !
মনখারাপের মাদুর পাতা নদীর পাড়ে
যেখানে কেউ যাওয়ার কথা আর ভাবে না
বিকিয়ে গেছে স্বপ্ন দেখার ঘুমগুলো সব ;
ভাবতে ভাবতে আবার নতুন জন্ম হলো
এবার আমি ঘুমিয়ে যাবো মায়ের কোলে।
শ্মশান ভূমি
নির্জনে নদীতীর ছুঁয়ে আছে সন্ধ্যার বিষাদ
এখানে অক্ষমা জাগে অহোরাত্র বিপন্ন চাঁদের পাশাপাশি
এখানে আদিম রিপু বিশুদ্ধ অগ্নিতে পুড়ে ছাই,
এখানে স্তব্ধতা শুধু প্রগলভ, প্রকৃতি এখানে মিতভাষী।
নিষ্পত্র বৃক্ষের ধৈর্য ধারণার অতীত কঠোর
তবু ছত্রখান ইহজন্ম কন্টকিত শয্যার উপরে,
যেন জ্যোৎস্নার কামনায় আয়ুভুক তৃষ্ণার্ত চকোর
জন্মান্ধ ঋষির স্থৈর্যে ধ্যানস্থ ঘোর অন্ধকারে।
হরিধ্বনি ভেসে আসে, দর্পহারী সময় নিষ্ঠুর,
মৌলিক তৃষ্ণার জলে সৌদাগরী নৌকার অহং
শেষবার ডুবে গেলে অসহ্য নিঃস্ব শেষযাত্রা পথে
শ্মশান-বন্ধু বোঝে প্রতীকী কান্নার সব রঙ।
শৈশব
একটি বালক হাসে
অস্পষ্ট কুয়াশা ঘেরা আমার শৈশবে।
রুক্ষ পাথুরে ভূমির উপরে কত রঙ
শুকিয়ে জমাট হয়ে আছে,
তার ওপারে ছন্নছাড়া বিকেলের আলো--
গৃহস্থের পিছুটান যেমন
ঘুমের শেষেও জেগে থাকে !
সমস্ত অনিবার্যতার অভিজ্ঞান জীর্ণ পাতাকে
আমার জন্য রাতপাখিদের ঘুম আসে না !
আমার জন্য গন্ধফুলের শুকিয়ে যাওয়া
সঞ্চিত সব কান্নাগুলোর মূল্য জানি ;
ট্রেন চলে যায় নিয়ম মেনে সন্ধ্যাবেলা
যাদের মুখে সকাল বেলার আলোরকুচি
যাদের জন্য বসন্ত দেয় টাটকা পলাশ
অপূর্ণতা নিয়েই তাদের সঙ্গে আছি।
হ্যাঁ বলেছি, আবার আবার বলবো আমি
গড়িয়ে পড়ে, ঠোক্কর খায় নুড়ি পাথর
তাই বলে কী ঘুরে দাঁড়ানোর নিষেধ আছে ?
দেখি পর্ণমোচী গাছের নিচে কামান্ধ রাত ;
দেখি নিগৃহীতার আর্দ্র চোখে স্বস্তিবাচন
কাদের বুকে লালন করে আত্মাহুতি !
না যাবো না বললেই কী আর যাবো না !
মনখারাপের মাদুর পাতা নদীর পাড়ে
যেখানে কেউ যাওয়ার কথা আর ভাবে না
বিকিয়ে গেছে স্বপ্ন দেখার ঘুমগুলো সব ;
ভাবতে ভাবতে আবার নতুন জন্ম হলো
এবার আমি ঘুমিয়ে যাবো মায়ের কোলে।
শ্মশান ভূমি
নির্জনে নদীতীর ছুঁয়ে আছে সন্ধ্যার বিষাদ
এখানে অক্ষমা জাগে অহোরাত্র বিপন্ন চাঁদের পাশাপাশি
এখানে আদিম রিপু বিশুদ্ধ অগ্নিতে পুড়ে ছাই,
এখানে স্তব্ধতা শুধু প্রগলভ, প্রকৃতি এখানে মিতভাষী।
নিষ্পত্র বৃক্ষের ধৈর্য ধারণার অতীত কঠোর
তবু ছত্রখান ইহজন্ম কন্টকিত শয্যার উপরে,
যেন জ্যোৎস্নার কামনায় আয়ুভুক তৃষ্ণার্ত চকোর
জন্মান্ধ ঋষির স্থৈর্যে ধ্যানস্থ ঘোর অন্ধকারে।
হরিধ্বনি ভেসে আসে, দর্পহারী সময় নিষ্ঠুর,
মৌলিক তৃষ্ণার জলে সৌদাগরী নৌকার অহং
শেষবার ডুবে গেলে অসহ্য নিঃস্ব শেষযাত্রা পথে
শ্মশান-বন্ধু বোঝে প্রতীকী কান্নার সব রঙ।
শৈশব
একটি বালক হাসে
অস্পষ্ট কুয়াশা ঘেরা আমার শৈশবে।
রুক্ষ পাথুরে ভূমির উপরে কত রঙ
শুকিয়ে জমাট হয়ে আছে,
তার ওপারে ছন্নছাড়া বিকেলের আলো--
গৃহস্থের পিছুটান যেমন
ঘুমের শেষেও জেগে থাকে !
সমস্ত অনিবার্যতার অভিজ্ঞান জীর্ণ পাতাকে
সঙ্গী করে উড়ে যাওয়ার আগে সার্থকতার অভিমুখ বদলের সম্ভাবনা সূচিত করবার জন্য অভিভূত হয়, আর বালক সামনে এলে আমার অতীত কেঁদে ওঠে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন