নীপবীথি ভৌমিক-এর কবিতা

নীপবীথি ভৌমিক-এর কবিতা


একটা অনিশ্চিত হেঁটে যাওয়া


 খুলে যাচ্ছে ক্রমশ দিনের আলো,
          অথচ রাস্তা এতটা গভীর কেন?
    সবুজ অরণ্য জুড়ে নামে ক্রন্দনরত 
      আলো-ছায়া
   তবে এ কি কোনো ইশারায় বেঁধে ফেলা অনিশ্চিত আহ্বান ?
 
     হেঁটে চলে যাচ্ছি 
          পাড় ভেঙে  পাড়ের কূল...
   
     শামুক লাগে পায়ে। জড়িয়ে যায় হলুদ 
    হেমন্তের আগুন,
     কিছু হেঁটে যাওয়া পথের নাম অনিশ্চিত
     হয় জেনেই কি ক্ষমাকে করেছি শর্তহীন !
 
 
 
একটি জীবনের খোঁজে       
 

যতটা অন্ধ ভেবেছি নিজেকে ততটাও কী দৃষ্টিহীন আমি!
 
    যতটাই চোখ খুলে রেখেছি,
 ততটুকুই কি আলো এ চোখে?
 
      প্রশ্নে বাঁধি বারবার। 
    খনন করে চলি আলো থেকে আঁধারের সৌন্দর্য
 
    অথচ, মুখ থুবড়ে পড়ে যায় 
 কেন এ জীবন-পথ, রহস্যের আড়ালে থেকে
  যায় উত্তর সব।
 
     প্রতিটি সন্ধ্যের কাছে আসলে,
   মাটির ডাক থাকে। ফিরতে ফিরতেও যে ফিরে
    যাওয়া হয় না আর সেপথে।
 
 
 ব্যথা

 
    ব্যথা থাক। আয়েশ কর শরীর।
     দু'হাতে সরিয়ে তাকে, কাটাবে কিভাবে
       তুমি নিঃসঙ্গ যাপন?
 
           ব্যথা থাক আজ।
  হাঁড় মজ্জা জুড়ে নামুক  যন্ত্রণার উৎসব মাধুর্য
 
         এসো, ব্যথাই মাখি আবার
               দেহের কাছে নতজানু হয়ে,
   সঙ্গহীন হওয়ার চেয়েও যে এ ব্যথা বড়ই দামি।
 
 
সংলাপ

 
     সংলাপ হারিয়ে গেলে নিজেকেই আবার
          মৃতের আসনে সাজিয়ে রাখি,
     হাতে তুলে নিই আতর-চন্দন, কোষা ভর্তি
        সূর্য-জল
 
      মায়াজন্ম বলতে যা কিছু বুঝি আমরা
          জানো কি তাকে? চেনো কি? 
   সেই স্বর্গীয় ফুল, সেই গোপন প্রেমের রহস্য...
 
      সংলাপ হারিয়ে গেলে
    নিজেকেই নিজে সাজাই চিতার আগুনে।
     বেঁধে রাখি ঘাস-দূর্বা, সবুজ তৃণের বন্ধনে
 
         আসলে, সংলাপ ফুরিয়ে গেলে
   আমরা কেউ মাটি, কেউই বা ছাই ওড়া গান।
 
 

  গান
      

     প্রতিটি অন্ধকারের ভিতর 
             জন্ম লুকিয়ে থাকে।
 
   এই যে নীরবতায় সুর বেঁধে
  বসে থাকা একান্ত সিঁড়ি কোণ,
      খোলা জানলায় চোখ রেখে সে কোন
  সুরে আঙুল সাজিয়েছে সেতারে
     তা কি জানে ?
 
     পাখি উড়ে যায়। এক আকাশ থেকে 
        আমার নিজস্ব আকাশে
 
          এসো, জন্ম খুঁজি আমরা আবার।
         জীবনকে আকাশ ভেবে
            উড়িয়ে দিই পাখির কোলাহল।
 

 


২টি মন্তব্য: