উৎপল মান-এর কবিতা

উৎপল মান-এর কবিতা

যা আর লেখা যায় না
 

শেক্সপিয়রের পর
ঘুম নিয়ে কবিতা লেখা যায় না
রবীন্দ্রনাথের পর
সোনার নৌকা নিয়ে কবিতা লেখা যায় না
আলোক সরকারের পর
নির্জনতা নিয়ে কবিতা লেখা যায় না
জীবনানন্দের পর
পাখির চোখ নিয়ে কবিতা লেখা যায় না
 
শঙ্খ ঘোষের পর
নিরপেক্ষ প্রতিবাদ লেখা যায় না
 
শুধু প্রতিবাদের রং বদলে দিয়ে
নিরপেক্ষ সাজা যায়


 
মিয়ানো মানুষ
 

নিজেকে গাঁথার মতো
তীব্র শ্লেষ 
কী আছে
 
রক্ত?
 
গেঁথে ফেলবে মাটির সঙ্গে
যে তির
তার নাম
 
অপমান?
 
আমার গ্রামশরীর
নিখুঁত এক বজ্রের জন্য
হাত পাতে
 
বুক পাতে
নিমেষ কাঁপানো এক
বজ্রের জন্য 
 

প্রতিবাদ

 

প্রতিদিন সে একটু একটু করে খুন হয়ে যায়
প্রতিদিন তাকে ছেড়ে যেতে দেখি তোমার ঘর
তুমি বুঝতে পার কিছু একটা
তুমি বুঝতে পার বড় কিছু একটা ঘটে যাচ্ছে
অথচ তোমার করার কিছু নেই
ওর জায়গা নিচ্ছে অন্ধকার 
ওর জায়গা নিচ্ছে অফিসের কম্প্রোমাইজ
বিছানার ভোগ, আরামের গণ্ডার
আর সে পিছিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন
নিজেকে নরম করে 
নিজেকে আলগা করে দুর্বল করে
তলিয়ে যাচ্ছে সে
অথচ তোমার ভেতরে একদিন সে ছিল
মাথা উঁচু করা একটা ফিগার
গলা উঁচু করা একটা ভঙ্গি 



 
নাম নেই 

 

 
নিমেষে মুড অফ হয়ে যায়
গাছ থেকে নেমে আসা একটা গাছকে
জ্বলতে দেখি
টনটন করে মাথা
হাড়ের মধ্যে কোনও প্রাচীন অবদমন
মাংস ফুঁড়ে বেরোতে চায়
কোনওটাই ভালবাসা নয়
ঘেন্না বা পাপ নয়
চিরাচরিত ঘুমে আমি দেখি
ওই একটা গাছ
গাছ  থেকে নেমে
আমার মাংসের সামনে জ্বলে যাচ্ছে


 
দূরে আছি
 

 
এখন বসন্ত থেকে দূরে আছি আমরা
বসন্ত থেকে কিছুটা দূরেই আমাদের বসতি
একটু হেঁটে গেলেই নদীর ওপর ব্রিজ
রাস্তার ওপর কালভার্ট
জঙ্গলের ভেতরে আবাসন তৈরির ফিসফিসানি
এখন বসন্ত ও প্রেম 
বাতাস ও বিষাদ-  বেঁধে না বুক
বসন্ত থেকে বেশ দূরে আছি, ভালবাসা থেকে
এখন আগুন জলের ভিতরে
কেবলই পুড়ে পুড়ে নষ্ট হয়ে যায় 


 
জায়গা

 
 
কোথাও দাঁড়াতে গিয়ে বুঝি
এটা জায়গা নয়
যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম, বুঝি
এটা জায়গা নয়
আবার দাঁড়াতে চাই
জানি, জায়গা নয়, জায়গা নেই

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন