জিৎ পাল-এর কবিতা

জিৎ পাল-এর কবিতা
 

কুমড়ো ফুলের আলো

 
১৪
অনেক কোকিল আছে বুলবুলি কানাকুবো
অথবা ছাতার পাখি চড়াই বাবুই
মাছরাঙা কাঠঠোকরা সব দেখা যায়
অথচ অনেকদিন গ্রামে কোনো কাক-ই দেখি না
 
প্রণবের বাবা মারা গেলে
দাঁড়িয়ে নদীর পাড়ে দু'হাতে খাবার নিয়ে
কতবার কা কা করে গেল
অথচ এলো না কোনো কাক
 
গ্রামের যেখানে যত কাক ছিল সব
উচ্ছিষ্ট সন্ধানে যেন শহরের দিকে চলে গেছে
 
শহরে যে কটি আছে কোকিল চড়াই
তাদেরও তো মাঝেমাঝে কাক বলে ভুল করে বসি
 

১৫
জমিতে লাঙল দেয়া শেষ হলে পরে
সমস্ত আগাছাগুলি তুলে ফেলা হয়
ফসলের মাঝে দেখি তবুও আগাছা
ফসলের থেকে দ্রুত বাড়ে
কৃষক নিড়ানি দিয়ে মাঝেমাঝে বিদে দেয়
তবু যেন আগাছা মরে না
আবার হঠাৎ করে এখানে ওখানে
                                    আগাছা জন্মায়
 
পৃথিবীতে আগাছার এত পরমায়ু !
 

১৬
শুভর মা আর ঠাম্মা দেখি প্রতিদিন ঝগড়া করে কখনও বা মৃদু আর কখনও বা তীব্র ঝাঁঝ বড় কানে লাগে
সকলে অভ্যস্ত হয়ে যাই ধীরে ধীরে
 
মাঝেমাঝে শুভর ঠাকুমা
রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়
বসে থাকে রাস্তার কিনারে, খেজুরতলায়
সন্ধ্যা হয়, ধীরে ধীরে রাত নেমে আসে
শুভ ও শুভর বন্ধু ঠাকুমাকে বারবার ডাকে
ঠাকুমারও খুব জেদ কিছুতেই ফিরবে না ঘরে
শুভ ও শুভর বন্ধু ওখানে দাঁড়িয়ে থাকে ঠায়
 
একটু রাতের দিকে শুভর মা আসে
একবার ডাকতেই সুড়সুড় করে চলে যায়
আমরা সবাই মিলে হাসতে হাসতে বাড়ি ফিরি
বুড়ির মুখেও খেলে জিতে- যাওয়া মৃদু হাসি যেন
 
 
আমাদের গ্রাম থেকে কেউ
বৃদ্ধাশ্রমে থাকে না এখনও

 
১৭
লটারি টিকিট কাটে প্রতিদিন
অনেক টাকার স্বপ্ন নিয়ে শুতে যায়
কিছুই মেলে না তবু পরদিন আবার আবার
বাইশ বছর ধরে হারুদাকে দেখি যে কে সেই
কিছুই বদল নেই লটারি টিকিট কেটে যায়
প্রতিদিন স্বপ্ন দেখে লক্ষপতি হয়ে গেছে ভোরে
 
বাইশ বছর ধরে আমিও তো শব্দ নিয়ে নাড়াচাড়া করি
প্রতিদিন শ্রেষ্ঠ এক কবিতা লেখার স্বপ্ন নিয়ে
হারুদার মতো বেঁচে আছি

            

 

 

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন