কার্তিক নাগের কবিতা
এই মাটি মায়ের গর্ভ, এই মাটি আমার কবর
১
মাটির সাথে বেশ কয়েকদিন
হল
সখ্যতা হয়েছে
এখন তার কাছেই গিয়ে বসি
যা কিছু কথা এখন তার সাথেই
সবুজ সবুজ কত নদীর মতো
আসন, আমি আসব বলে
বিছিয়ে রাখা
আমি ক্লান্ত জানু পাতি। দুপুর গড়ায়
কাঁধে হাত রেখে সে কথা
দিয়েছে আমায়। আর কটা দিন
গেলেই জায়গা দেবে
আমার জন্য তৈরি হচ্ছে
সাড়ে তিন ফুট ভালোবাসা...
২
দুই মেরুর দুদিকে
দাঁড়িয়ে আছে মা
একজন আমাকে প্রসব করে
বড় হতে দিল, লাউ ডগার মতো
আরেকজন আমাকে গর্ভে নেবে
বলে দাঁড়িয়ে আছে সেই
মাঝখানের গরম আলোয় গা
ছকছক করে তীব্র আক্রোশের
মতো তাপ চামড়ায় আঁকে কুষ্ঠরোগী-মুখ
প্রবল ভাসমান বল এখন আমি
ঝিনুকের মতো শান্ত ঠাণ্ডা
আঙুলের
মাঝরাত্রি-গহ্বর খুঁজছি
৩
অন্ধকারে রাখা আছে
কয়েক লক্ষ শুক্রাণু
সাদা সাদা, কিলবিল...
আমি পৌঁছাতেই, একটা লোভনীয়
হৃৎপিণ্ডের জন্য তারা আপ্রাণ
ডুব দেবে!
যে হৃৎপিণ্ডের জন্য
কোনো এক যুদ্ধ-সংক্রান্তি
দিনে
এত এত সহোদর হত্যা!
তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে
বুলিয়ে
আমি পাপ মুক্ত হব। সহোদর
হত্যার পাপ৷
লাল টুকটুকে নরম সিংহাসন
ভাগ করে দেব এক একটা শুক্রাণুর ঠোঁটে
সাদা সাদা, কিলবিল...
পাশ ফিরে শুতে ভয় করে আমার
পাশ ফিরে শুতে ভয় করে আমার,
নীচে গভীর খাদ পাতা আছে
সামান্য ফসকালেই একেবারে
থেতলে যাব।
আমি এমনিই কড়িকাঠের দিকে
চুপ করে শুয়ে থাকব। তোমার
আঙুলটা
ফুলে ঢোল হয়ে যাক, রক্ত
পড়ুক
আঙুলটা ভেঙে যাওয়ার আগে
তোমার পেটের ভেতর ঢুকব৷
পাশ
ফিরতে বলবে না৷
পেটের ভেতর শুয়ে আছে আমারই
শিশু
তার সাথে হাসব, নাচব, ছুটব
কয়েক শো মাইল
কড়িকাঠটায় ঘুন লাগার আগে
আমরা বেরিয়ে আসব কাঁধে
কাঁধ ধরে,
আমরা বাপ বেটা, আমরা দু
ভাই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন