তপন মণ্ডল অলফণি'র কবিতা
অন্ধকার, প্রেম
অন্ধকারের ভেতর হাঁটতে গিয়ে
দেখি
অন্ধকার নিজেও বড়ো একা
একটা চাঁদ একটা জোনাকি
আর প্রিয় আলো বাহক মানুষ
এদের সাথে সঙ্গ দিতে দিতে
অন্ধকার নিজেও আলোর দিকে
এগিয়ে যায়
যারা কোনদিন অন্ধকারে হাঁটেনি
তারা প্রেমিকেরও হাত ধরতে
জানে না
জানে না অন্ধকারকে আলোতে আনায়
প্রেম
টিমটিমে আলো
এই টিমটিমে আলোয় সন্ধ্যে টেনে
আনে
আমাদের উঠানে, ফুসফুসে বাতাস
টেনে আনে, একটা যুবতীর লাশ
ঝিনুক কুড়োনোর নদী থেকে সে
বাঁচার কোরক ফাটিয়ে স্বাদ
এনেছিল
আর এই পূর্বজন্মের সন্ধ্যে, টিমটিমে আলো
টানতে টানতে নিয়ে গেল জঙ্গলে
একটা নেকড়ে, একটা ক্ষত বিক্ষত পাঁজর
আশেপাশে কিছু বিষ পিঁপড়ের দল
গোপনে ঘাই মারে আরও গভীর
অন্ধকারে
কবে যেন কে বলেছিল তোমার
ঊরুতে মাথা রেখে
একান্নবর্তী শান্তি খুঁজে পায়, টানা রিকশাওয়ালা
টিমটিমে আলোয় সন্ধ্যে টেনে
বাড়ি ফেরে
অংক
শরীরবৃত্তীয় কাজে আমরা যতটা
পটু
মনোবৃত্তীয় কাজে অপটু
সিঁড়ি ভাঙা অঙ্ক কষছি
নামাটা নদীও হতে পারে
তবে অঙ্ক না মিললে
ভগ্নাংশ থেকে যায়
ছাতা বিহীন লোক
বৃষ্টিতে যে মানুষটি ভিজে গেল
তার পকেটে ছিল সারাদিনের
রোজগার
তাকে কিনতে হবে পেটের জ্বালা নিবারণ
কিনতে হবে ছেলের ওষুধ
সে দোকানে ঝোলানো ছাতার দিকে
তাকিয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে
এরপর কাল যদি নিম্নচাপ আরও
ঘনীভূত হয়
রোজগারের পকেটের শূন্যতায়
বানে ভেসে যাবে নুনের বাটি
ভাতের হাঁড়ি আর
সাইকেল আরোহী
সন্ধ্যে বেলায় দুটি সাইকেল
পাশাপাশি এগিয়ে যায়
ওরা মনের কথা বলে
ওরা ভবিষ্যতের কথা গড়ে
ওদের পরিজন জানে না কখন সূর্য
ডুবে গেছে পশ্চিমে
সন্ধ্যে বেলা যে দুটো সাইকেল
অতিক্রম করে কয়েক ক্রোশ
তারা কখন কৃষক হয়ে যায়
ক্ষেতে ফসল ফলানোর বীজ ছড়ায়
ওদের পরিজন জানে না কখন সূর্য
ডুবে গেছে পশ্চিমে
ওরা জানে শিক্ষিত হতে গেলে
সন্ধ্যে বেলা বাড়ি ফিরতে হয়
কিংবা রাত করে
আসলে ওরা স্বাক্ষরতা অভিযানে
আজও
বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল
বাড়িয়ে দেয়
তপনের কবিতা জীবনের খুব কাছাকাছি থাকে । কখনো অভিমানই অভিজ্ঞতা, কখনো অভিজ্ঞতা অভিমানকে বাঙ্ময় করে তোলে ।
উত্তরমুছুনতপনের কবিতা জীবনের খুব কাছাকাছি থাকে । কখনো অভিমানই অভিজ্ঞতা, কখনো অভিজ্ঞতা অভিমানকে বাঙ্ময় করে তোলে ।
উত্তরমুছুনছাতা বিহীন লোক, অংক, অন্ধকার, প্রেম অসাধারণ কবিতা। তপনদার কবিতা সবসময় দেয় অন্য এক আস্বা।
উত্তরমুছুন