সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কবিতা

সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কবিতা



এইসব প্রস্তাবিত বিষাদ _১

প্রবল শীতের ভেতর খালি গায়ে উঠে আসে দূরের রাক্ষস। এ পর্যন্ত রাতপাহারা। কুয়াশার পাশে গমক্ষেত নিভে গেলে দুএকটা শ্মশান বেজে ওঠে শূন্যতার ভেতর। রাক্ষসের তৃতীয় লিঙ্গ ক্রমশ লম্বা হতে হতে, মাটি খুঁড়ে তুলে আনে কাকবন্ধ্যা যোনি। নখে দাঁতে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায় রক্তমাংস, শিরা, যৌনধমনী। 

এরপর দৃশ্যান্তর। আবহের পাশে পড়ে থাকে পাপ_পূণ্য, চরাচর। 

এইসব প্রস্তাবিত বিষাদ _২ 

পাথর খুঁড়তে খুঁড়তে মৃত্যুর কথা উঠে আসে। অনেক পুরানো হয়ে যাওয়া মশলার মত, মনখারাপ একটা গন্ধ নদী পর্যন্ত হেঁটে যায়। সন্ধের দিকে হেলে পড়েছে বকুলগাছের ছায়া। হাত পা ছড়িয়ে বসে আছি জন্ম _জন্মান্তর। আলো কমে এলে ক্রমশ আবছা হয়ে ওঠে প্রিয়মুখ, দূর চরাচর।    

শোকের ডানা মেলে _দু _একটা পাখি ফিরে আসে প্রস্তাবিত বিষাদের ভেতর। 

এইসব প্রস্তাবিত বিষাদ _৩

মাঝরাত্তিরে উড়ে আসে গোলাপিমাথা হাঁসের দল। পুরানো ডাকবাক্স ভেঙে ঠুকরে খায় মরে যাওয়া চিঠির অক্ষর। জোনাকিহীন এই অন্ধকারে জেগে থাকে যেসব বাতিস্তম্ভ, আসলে তারা ছায়াহীন। জল ঘুমালেও তৃষ্ণা জেগে থাকে। হাঁসেরা নেমে এসে বসে প্রেমিকার মত _ মুখে, ঠোঁটে, বুকে। স্মৃতি পর্যন্ত ঝলমল করে ওঠে। 

মৃতেরা নাম ধরে ডাকে না কখনো। ডানা থেকে গড়িয়ে নামে আঁধার তরল। কুয়াশায় পালক খুলে রেখে _এভাবেই অনিবার্য ফিরে যায় শোকপ্রস্তাবের ভেতর। 


৪টি মন্তব্য: