শুভ চক্রবর্তী'র কবিতা
হুল
পাতায় পাতায় হুল, ভাঙা মূর্তি জল
কিন্তু কোথায় সে? মাটি কেঁপে ওঠে ধর্ম---
কুশ থেকে তামা স্থির যন্ত্রণার বর্ম
ফেলে নিয়েছে সে তার যেটুকু সম্বল!
অসুস্থ মায়ের হাতে আতব-- কাজলে
মৃত্যুর যথেষ্ট সত্য আজ মর্মে ,স্নানে।
হাতে হাত নিয়ে দীর্ঘ চিঠি মহাপ্রস্থানে
কপালে সিঁদুর লেপে সে উন্নত আঁচলে
বৃষ্টির ফোঁটায় ধুয়ে যায় গাছ, কে তুমি
আঙ্গুল ইশারা দিলে ভরা মাঠে ছাই
হে আশ্রয়, আমি যেন বারে বারে পাই
তোমার স্পর্শ, যে সুক্ষ,সূর্যাস্তের প্রাণ
যাঁর প্রেমে আজ এইখানে ভূমি রক্ত
মা, আমাকে সেই পাত্র ভরে করো দান।
ভোর
একদিন এক মুণ্ডুহীন পশু আমার সামনে এসে দাঁড়ায়
ভোর হতে না হতেই সমস্ত অধিকার লাল হয়ে ভাসছে
আমার স্বপ্নের মতো অন্ধকার
ঈশ্বরের মুখে তখন সেই পশুর মুখ বসানো হয়েছে
আমি বিস্ময়ে তাকিয়ে আছি পশুটির দিকে
স্বপ্ন ভেঙ্গে একটি বিদ্যুতের খুঁটি এসে পরলো কবন্ধ পশুর উপর, আর মরুঝড়ের তাঁবু উড়ে এসে ওকে ঢেকে দিচ্ছে । বাতাসের গন্ধ গণধর্ষণের মতো আছড়ে পড়ছে সমুদ্র সৈকত জুড়ে আমি ছুটতে ছুটতে
আশ্রয় নিলাম একটি গোয়ালঘরে
এতো রক্ত যে পা দেওয়ার জায়গা নেই
আমি নিজের মাথাটা লুকিয়ে রাখলাম
ঝর থেমে গেল এই সহস্রাব্দের
অন্ধকার থেকে কেবল একটাই শব্দ আঁচ করি
ভোরের আলো এসে পড়ল সেই সময়...
মৃত্যুর ভাষা
মানুষের মৃত্যু বিস্তারিত নয়। সে শুধু অনুগ্রহ করে
অনুভূতি প্রকাশ করে,এই তার কাজ।
কী সে বোঝাতে পারে আমাদের কথায়?
কী সে বলতে পারে না ওষুধের গন্ধ নিয়ে
একবার সম্ভব হলে তার সামনে গিয়ে দাঁড়াই আজ
যদি মনে হয় সে একা,চলো তার পিঠের উপর মুখ রেখে বলে আসি কী হে এতো বিমর্ষ কেন আমিতো তোমার সঙ্গে
আছি, বরং দুটো কথা বলো সংসারের
হে প্ৰহর চলো জেনে আসি তার রক্তছিদ্র হলাহল
কী তার অপরাধ আজ পর্যন্ত মনে পুষে রেখে ফিরে গেছে মৃত্যুর ক্ষমায়, আজ তাই প্রেমিকের কাছে প্রিয় নাম মৃত্যু!
অন্ধকার দেওয়ালে লেখা ঈশ্বরের যন্ত্রণা
ক্রমে মন থেকে মুছে গেছে জলের পাতালে ?
মানুষের মৃত্যু বিস্তারিত নয়।
সে শুধু মানুষের কথা বলে, সে শুধু জীবনের শেষ ভাষা হয়ে বেঁচে থাকে রক্তের তরঙ্গে !
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন