সুদীপ বিশ্বাসের কবিতা

সুদীপ বিশ্বাসের কবিতা 

 

শব্দহীন

শব্দের চেয়ে আরো এক গভীর অভিপ্রায় পুষে রেখেছি
পোষমানা বেড়ালের মতো সে আঁচড়ায় কামড়ায়
আমার গোপন ঠিকানায়
 
যা কিছু শব্দের অধিক শরীর ছুঁয়ে দেয়
মনকে মাতায় তার খোঁজে আমি
নাসিক্যবর্ণের খোঁজ খবর কেউ রাখেনা
একমাত্র আমি শব্দহীন  খুঁজে বেড়াই আকাশ পাতাল
 
আমাদের কাজ নয় বিশদ শব্দ প্রয়োজন দমকলে যাবো প্রয়োজনে তুলে নেব শব্দভেদী জল গড়াবো  নিজেকে বিপদের খাদ থেকে উদ্ধারকৃত বিকোবে ক্রমশ
 
কোথায় তোমার কলম আর খাতা
খুঁজে পাচ্ছিনা যে কথা নেই শব্দ নেই এখানে তোমার অনুপস্থিতি যেখানে
ঠোঁটের স্পষ্ট দাগে পিপাসাও লেগে থাকে কিছু
 
মুহূর্তও ডুবে যায় নিগূঢ় শব্দবন্ধনে
প্রতিবন্ধী চাঁদ হাপিত্যেশ শুধু
আমাদের ঘুমে মগজের আগুন নিভতে থাকে
মেঘমনে শব্দোত্তর পরাজয়
পায়ে পায়ে পাথর কঠিন হাত ছুঁয়ে যায়
 
অবাধ জ্যোৎস্না রুপোলী শব্দ বুনে চলে
ফ্যাক্ ফ্যাক্ হাসে
ড্রিংকস শেষ হলে টর্নেডো ঘনিয়ে ওঠে
ঘূর্ণি শব্দহীন
ধোঁয়ার চাতুরী দমকে চমকে..
 

 
কখনো সখনো নদীতেও বার্ধক্য জুড়ে বসে
 
অনাবৃত আকাশের মতো সীমান্ত পেরোয় চিল
তুলোর ঔদার্য্যে কেবলই শুষে নিচ্ছে রক্ত জল
দোকানির লাগাম ফিরুক বা নাই ফিরুক
অবশিষ্ট ক্রোমোজোম মিছরি সরবতে
যতি চিহ্ন এঁকে দেয় অবহেলে
 
বুনো হাঁস নদীপথে নীরবতা রেখে যায়
দশমিক গল্পকথায় কতো আদর লুকোনো
আধখানা অন্ধকার রক্তজবা পথের আড়ালে
 
বিরহ ঝরছে
স্বপ্নের দিকচিহ্ন পাকা ফুলের রাতে
বুড়ো শালগাছ জড়িয়ে নিচ্ছে রাতের বাতাস
অসুখ ঘরের লাল স্ট্রবেরি সিরাপ
শিয়রের কাছে দু'দন্ড প্রিয় মুখ হয়
 
ফুলগুলো আসলে প্রজাপতি
সুন্দর কথাগুলো নদী জল
অথচ প্রত্যেক স্পর্শে কিছু দীর্ঘ  যাতায়াত
কখনো সখনো বার্ধক্যের নদী হয়ে বইতে শুরু করে।


 
শালকুমারের সালুক শোলোক

আমরা দু'কলম গাছের ছায়ায় ইন্তি বিন্তি খেলবো
জোয়ান মরদের পাশে পাটভাঙা নতুন বউ দেখে
খিল খিল হাহা হিহি
 
ডাঙারিয়া চাঁদ ট্রেনলাইন ধরে ছুটবে
রাজাভাতখাওয়া বনবেড়াল জঙ্গলমহলে
 
জলের ধারে মুচকুন্দ গাছে ফিসফাস
মন্তর খাওয়া ইস্টিশনে শোলক গল্পমালা
কু ঝিক্ ঝিক্
 
আমাদের ভাবনা নেই শালকুমার
সাদরি গান গলায় বুনে চলেছি
মাথার উপর নেশাখোর উপকথা
আমাদের ভাসিয়ে নিচ্ছে অন্য ভূবনের পানে।


 
কল্পপত্র
 
জোয়ার আসার পর আমরা কি ডাঙায় উঠে যাবো
গানের রস সকলে পান না
কেউ কেউ সুররসিক হন
রসিকনগরে কাক কিংবা কোকিল সুরধুনী নদী হয়ে ওঠে
 
তেমনি অজয়ের পাড়
আলু থেকে সুরা সঙ্গত পায়
ক্ষণে ক্ষণে দৃশ্য বদলায়
 
মৃত দুপুরবেলা তালপুকুরে ছায়া নামে
মানুষের অবাধ মেলামেশা খিড়কি খুলে
বসে থাকি মহর্ষি দালানে
 
একটা মাছি কল্পনার পাল্লা খুলে দেয়
আমার চারপাশে বিভিন্ন কক্ষপথে
আবর্তিত হতে থাকে দিনশেষে
ঘুমের দেশের গান

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন