মনোজ দে'র কবিতা

মনোজ দে' কবিতা

আমাদের বনেদি বিরহ

.
শেষবার আর জোড়া লাগানো হয়নি
গুনেও দেখিনি ঠিক কত টুকরো হয়েছিল
কতদূর ছড়িয়েছিল নিশানা? মনে নেই
প্রেসক্রিপশন মনে পড়ে শুধু
তোমার জুতোর শব্দে
ধুলো এবং হাতের রেখাটুকু পড়ে রয়েছে সেখানে

.
প্রথম চশমার ব্যবহার রপ্ত করতে পারোনি এখনও
বৃষ্টি আসে। দৃশ্য সরে যায়
শব্দ কখনই নিরাপত্তা নয়, স্পর্শ যতখানি
ঢেকে রাখে আহ্লাদ, বিবাহ

তোমাকে নতুন লাগে, ভুলে যাওয়া কথা
গোপনে স্বামীকে বলো
প্রথম সমুদ্র স্নান অশ্বারোহীর অভিজ্ঞতা

.
সমস্ত কিছুরই ব্যাকরণ থাকে
এই যে পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়ি
অযত্নের গাছ বড় হয়, দেওয়ালের ভেতর ছড়িয়ে পড়ে
শেকড়সমূহ; ফেলে আসো দানা-পানি ছাড়া

অথচ গাছেরও স্নেহভাব আছে
সেও চায় এই প্রেম বেঁচে থাক, ফুল হোক

তবু ভেঙে যায়, দেওয়াল দু-টুকরো
একাকী শেকড় চলে গেছে ভেতর ভেতর
কোথায় হৃৎপিণ্ড, শিরা-উপশিরা, এনাটমি

খই পড়ে থাকে না কোথাও
একটা সবুজ মন
তোমার অবহেলায় ক্রমশ শুকিয়ে পড়ে

.
পেশা তো এমনই ভুল
পুনরায় ফিরিয়ে এনেছে তাকে
তবু জানি, প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে

পেশা তো এমনই ভুল
অভ্যাসের কাছে নিয়ে যায়
যদি ফের হেসে ওঠো
অন্যমনস্কতায় কিছুটা দেরি হয়ে যায়
কেউ ঠিক ডেকে নেবে আলো

মাদারির যেকোনও খেলায়
পেশা তুমি, সহজাত ভুল

.
হেসে উঠলে, হাতে রক্ত লেগে যায়
সারা সন্ধ্যে লুকিয়ে ঘুরেছি, আড্ডা, কথোপকথন
যারা আজ ফিরছে বাড়ি; তোমাকে সন্দেহ করি
এতদিন পর এলে,আমি আর অতীত ঘাটব না
পাথুরে পাহাড় আরও উঁচু হয় সাঁকোটির কাছে
এসো ছবি তুলি এক-দু খানা, কথা দাও
এই বছর বর্ষায় জল এলে 
আর গোছানো সংসারে ফিরবে না

.
বহুদিন পর যাওয়া হলো গ্রাম
মাটির ভেজানো পথ
চালার লাজুক ফাঁক থেকে মেঘ ঢুকে, রোদ বৃষ্টি কখনও

ছড়ির ইশারা তুলে একাকী টায়ার ছুটে যায়
তোমারও শৈশব কেটেছিল কোনও গ্রামে
কাদা লেগে ভিজেছিল কবেকার ফ্রক
আলো নেই। পায়ে লুকোচুরি দাগ
দু-আঙুলে সালোয়ার তুলে 

ভারী পায়ে শৈশব পেরিয়ে যাও

 

৬টি মন্তব্য: