পৃথা রায় চৌধুরী'র কবিতা

পৃথা রায় চৌধুরী'র কবিতা

 
সশস্ত্র 

আঁচলে-পাড়ে লেগে আছে সন্ধ্যে
দেওয়ালে একা ছায়া হিমকঠিন
এমন করেই হাঁটি সদর্প...
গজগামিনী
কাজলশেষের মন্থরগতি আগামী,
ফ্যাকাশে কেন ঠোঁট?
আগামীর পরের মিছিলগ্রস্ত আগামী
প্রতিশোধের কথা চেনাও।

আমি অজন্তাইলোরা অশ্লীল কারু
সভ্যতার সংজ্ঞায় স্পর্শ করেছি
তোমার কাঁধের দ্বীপ, উপত্যকাপিঠ
নিষিদ্ধ ঊরু...

ইতিহাস তোমার প্রিয় পাঁজর।


খেরো কেয়ারি 

স্বার্থবাগান ঘুরি
ওরা তোমার ফুল চায়, পাতা চায়
শেকড়বাকড়ডাল...

আমায় কাঁটাগুলো দিও
আমার চুলে গুনে গুনে গাঁথবো ঠিক যে কটা,
সেকটায় ফুটতে দেখো রক্তগোলাপ
খুশি হবে তুমি? হাসবে?

যখন পিছু টেনেছি, দেখিয়েছি শূন্য হাত
হেসে ভরে দিয়েছো আঁচল বিঁধে যাওয়া বিরহে
অজস্র ফিনকিতে ধমনীরা সাগরপ্রসবিনী
তুমি খুশি? তুমি হাসছো তো?

শস্য বাঁচাও, মূর্তিকারের নামে লিখে দাও প্রাণ
ঔরসকে দিও পিতৃত্বের ঋণ
নষ্টলগ্নের গন্ধর্বাচার আকাশপাতাল গ্রাসে গিলেছে
মূর্খ ভেজামাটি খেলাঘর।


সপ্তপদী 

তুমি বলে দিলে স্বাধীন দিনের কথা চাই
খুঁজে চলেছি তড়িঘড়ি সকালের খেই
ধরিয়ে দাও, শুরু করি; আবার যাবে?

শুকিয়ে যাওয়া গলা, স্বীকারোক্তিতে ভয়
তোমারও কি সামান্য ঠোঁট শোকায়?
চড়ে বসেছি গন্তব্যের দিকে মুখ, আংটিখাঁজ টিকিটময়।

ওরা কে, চেনার দলিলের দাবিদার?
চাদর, কাগুজে কাপের নেশা ঝরনাস্নান...
ভুলভাল কেনার দিন, কেনা ছাত তোমার;

পাশের ঘুমে সন্ধ্যে ছুঁলেই, নাস্তিক অনিচ্ছায় আস্তিক
দুপুরশরীরে রাতের জেগে ওঠা উল্লাস
জমানো কথাশিশির টুপটাপ, এসো টাইমমেশিন।

তোমার বাসিমুখে লেগে থাকে, এই চলুক।
পুণ্যার্থীদের মাঝে জানানো হয়নি গোত্র,
বলবে? বাকচোরা, তোমার মুখ...!


পরিগ্রহ 

হাজার জবান যখন চায় বন্দিনীর বন্দিশ
বেঘোর ঘড়ি হারাবার অজুহাত দিই
এখানে ওখানে শোটাইম... তোমার আমার ছায়াছবি

পর্দানশীন রাখঢাকের তোয়াক্কা করা ছেড়ে
চিল্লিয়ে বলি, কালো মাখছি...
ওরা দেখে চুপিসাড়,
কতো কিছুর মাঝে প্রেমিক বদলে যাও চিত্রকরে।

মিছিমিছি রাগ, আসবে না কেজো হাতে প্রেম?
সুবর্ণরেখা ধারায় তিরতিরে সরু চাল সুবাস
শুধু শিশুগ্রাস...
বাদী দুপুর তুমিহীন ভুখাপেট।

আলগা দাঁতে চেপে দেখেছি তোমার জাদুআঙ্গুল
... বাঁশরিয়া
তোমার পরিশ্রমী জামায় অক্সিডাইজড সিলভার
পরিয়েছো কানে, পছন্দ;
সংক্রামিত করেছি তোমার গালে গলায়
এয়োচিহ্ন ঝরে পড়া...


গর্ভ নাম ধাম 

এক মুঠি গান গাও সূর্যবিন্দু প্রলেপ,
উল্কাধারা হয়ে নামি অহরহ
কুয়াশাভেজা চাতকের বৃথাকামনায়
কথায় কথায় হারিয়ে যায় হরিয়ালি বাঁক।

স্ফীত নগ্নতায় জ্যোৎস্না ধরে রাখে
বিশ্বব্যাপী সে আমার গর্ভাশয়

লজ্জাবিনষ্ট শিশিরে লেখা
আলুলায়িত প্রেম।
চুল বাঁধি না বহু যুগ...

ঠিকানা খুঁজে ফিরে আসে
পশম, ওম, ওংকার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন